নবীন বরণ ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন প্রোগ্রাম আয়োজন করতে গিয়ে মুলাদী সরকারি কলেজে শাখা ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের উপরে ছাত্রদলের হামলা করেছে। এ হামলায় ছাত্রশিবিরের মুলাদী উপজেলা সভাপতি মো: হামিম ও ৭ শিবির কর্মীসহ ১০ জনের অধিক আহত হয়। ৫ জনের অবস্থা গুরুতর হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়, বাকিদের স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরেছেন। মুলাদী কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে নবীন বরণ ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন প্রোগ্রামের অনুমতি নিতে কলেজে গেলে ছাত্রদল এ হামলা করে। মুলাদী উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি মোঃ মহিউদ্দিন ঢালী সেক্রেটারি মোঃ বেল্লাল সরদার ও পৌরসভা যুবদল সভাপতি মো: রফিক ঢালির নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক ছাত্রদলের কর্মী হামলায় অংশ গ্রহণ করে । বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও বরিশাল মহানগর আমির অধ্যক্ষ জহির উদ্দিন মুহাম্মদ বাবর ও জেলা আমির অধ্যাপক আব্দুল জব্বার এই হামলার তীব্র নিন্দা জানান।
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে বরিশাল জেলা শিবিরের সভাপতি বলেন, “আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর মুলাদী সরকারি কলেজে ইসলামী ছাত্রশিবির আয়োজিত নবীন বরণ ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন প্রোগ্রাম উপলক্ষে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময়ের জন্য কলেজে উপস্থিত হন। কলেজ গেইটে পৌঁছালে মুলাদী উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোঃ মহিউদ্দিন ঢালী, সদস্য সচিব জুলফিকার আহমেদ বেল্লাল, কলেজ সভাপতি রিফাত মল্লিক, কলেজ সেক্রেটারি কাওছার হোসেন এবং যুবদল সভাপতি রফিক ঢালীর নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নৃশংস হামলা চালায়। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ উপস্থিত হলেও প্রশাসনের সামনেই হামলাকারীরা পুনরায় ছাত্রশিবির নেতৃবৃন্দের ওপর আক্রমণ চালায়। এ হামলায় অন্তত ১৫ জন নেতৃবৃন্দ গুরুতরভাবে আহত হন। তাদের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের প্রাথমিকভাবে মুলাদী সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়; পরে অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।”
“প্রকাশ্য দিবালোকে পুলিশের উপস্থিতিতে এ ধরনের ন্যক্কারজনক হামলা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা অবিলম্বে এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি। একইসাথে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছি।”
চট্টগ্রাম ব্যুরো : ইসলামী ছাত্রশিবির-এর দুই নেতার ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল-এর আনোয়ারা সরকারি কলেজ শাখার নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে ছাত্রদল। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে শিবির।
বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে আনোয়ারা উপজেলার জয়কালী বাজার সংলগ্ন গনি মার্কেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যায় এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে শিবির।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আনোয়ারা উপজেলা ছাত্রশিবির সভাপতি আলী হোসেন (২৫) ও আনোয়ারা সরকারি কলেজ শিবির সভাপতি মিসকাতুল ইসলাম (২৪) জয়কালী বাজার থেকে ফেরার পথে কয়েকজন যুবক তাদের পথরোধ করেন। একপর্যায়ে তাদের মারধর করে টেনেহিঁচড়ে কলেজ ক্যাম্পাসে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। আহত দুজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
আহত মিসকাতুল ইসলাম বাদী হয়ে কলেজ ছাত্রদলের কর্মী তারেক জিয়া (২৫), মো. শাওন (২২), মো. মাহিন (২৩), মো. সিফাত (২২), মো. জাবেদ (২২) এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
মিসকাতুল ইসলাম জানান, এক শিক্ষার্থীর ভর্তি কার্যক্রম শেষে বাজারে ফেরার সময় কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি বোরহান উদ্দিন ও নেতা জুয়েল তাদের ডেকেছে বলে জানিয়ে ছাত্রদলের কর্মীরা জোরপূর্বক কলেজ ক্যাম্পাসে নেওয়ার চেষ্টা করেন। যেতে অস্বীকৃতি জানালে তারা মারধরের শিকার হন।
এ অভিযোগ অস্বীকার করে কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি বোরহান উদ্দিন বলেন, “এ অভিযোগ ভিত্তিহীন। কলেজে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। বাইরে কী হয়েছে, তা আমি জানি না।”
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন বলেন, “শিবির নেতাদের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”