ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কবি সুফিয়া কামাল হলে বামপন্থি রাজনীতি ছাড়া অন্যান্য সব ছাত্রসংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবিতে আবেদন করেছেন ছাত্র ফেডারেশনের সাবেক সদস্যসচিব উমামা ফাতেমা। তার এই দরখাস্ত ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

শুক্রবার (৯ আগস্ট) হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর দেওয়া দরখাস্তে উমামা উল্লেখ করেন, গত বছরের ১৭ জুলাই শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত আন্দোলনের মাধ্যমে প্রশাসন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে হলে ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, শিবির ও বাগছাসসহ সব ধরনের রাজনীতি বন্ধ থাকবে। তার দাবি, গত এক বছরে এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকলেও সম্প্রতি কিছু সংগঠন গোপনে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।

তিনি লেখেন, ‘গত এক বছরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রশাসনের এই চুক্তি বলবৎ ছিল। কিন্তু এরই মধ্যে কতিপয় সংগঠন গুপ্তভাবে তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করেছে হলে। অতঃপর আজ সকালে বাংলাদেশ জাতীয়বাদী ছাত্রদল হলে সাত সদস্যবিশিষ্ট হল কমিটি ঘোষণা করেছে।’

উমামা লেখেন, আমরা শিক্ষার্থীর মনে করি, তাদের এইসব কার্যকলাপ, জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে সৃষ্টি হওয়া উল্লিখিত চুক্তিকে ভঙ্গ করে, যা স্পষ্টত সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণার শামিল।

এ দরখাস্তে চারটি সংগঠনের নাম উল্লেখ করে সেগুলোর কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন উমামা ফাতেমা। কিন্তু বাম সংগঠনগুলো নিয়ে তার কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। যদিও হলে বামপন্থি শিক্ষার্থীরাও অবস্থান করছেন। কোনো কোনো হলে তাদের কমিটিও রয়েছে।

এর আগে তিনি এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে ছাত্রদলের কমিটি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে শুক্রবার রাতের মধ্যে এটি স্থগিত করার আলটিমেটাম দেন।

উমামার দরখাস্তের বিষয়ে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক হামজা মাহবুব বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেসবুক গ্রুপে লেখেছেন, ‘উমামা ফাতেমা হলে বাম রাজনীতি ছাড়া আর কোনো রাজনীতি চান না। এটা কেমন কথা? মানে হিপোক্রেসি এট ইট’স পিক! হল এবং একাডেমিক এরিয়ায় রাজনীতির বিরুদ্ধে সবাই, আর উনি হচ্ছে বাম রাজনীতি ব্যতীত বাকি সব রাজনীতির বিরুদ্ধে।’

শুক্রবার রাতে এদিকে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা ঘিরে হল পলিটিকসের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। রাত সাড়ে ১২টায় রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীরা হলের তালা ভেঙে বিক্ষোভ করে বেরিয়ে আসে। এরপরই সব হলে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরে জড়ো হন কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। এরপর হলে সব প্রকার প্রকাশ্য ও গুপ্ত রাজনীতি বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান।

ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, হল পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতির বিষয়ে ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই হল প্রভোস্টের নেওয়া সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। পাশাপাশি হল পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতি নিয়ন্ত্রিত থাকবে।