বিজয় দিবস উপলক্ষে জুব্বা-টুপি পরিহিত অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধার কবর জিয়ারত করতে যাওয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীকে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ কর্মীর বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে কুষ্টিয়ার ইবি থানাধীন উজানগ্রাম ইউনিয়নের দুর্বাচারা গ্রামে চার মুক্তিযোদ্ধার কবর জিয়ারতে গেলে তাকে অপমান, বাধাদান ও শারীরিকভাবে হামলার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ সংক্রান্ত তার এক ভিডিও ভাইরাল হলে এসব তথ্য জানান তিনি।
জানা যায়, ভুক্তভোগী মোঃ সাব্বির রহমান ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি জানান, “কবরস্থানে পৌঁছে আমি যখন নীরবে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছিলাম, তখন সেখানে উপস্থিত কিছু মুজিববাদী লোক আমার পরিহিত জুব্বা, পায়জামা ও টুপি দেখে আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে “রাজাকার” বলে অপমান ও হেনস্তা করার চেষ্টা করে।”
এসময় শিক্ষার্থী শান্তভাবে নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সক্রিয় অংশগ্রহণকারী’ হিসেবে পরিচয় দিলে তারা আরও রেগে গিয়ে সেখানকার ব্যক্তিরা জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে, বিশ্ববিদ্যালয় ও তার প্রতি অশালীন ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে।
সাব্বির রহমান আরও বলেন, “তিনি পরিস্থিতি এড়িয়ে সরে আসার চেষ্টা করলে তাকে বাধা দেওয়া হয় এবং দলবদ্ধভাবে তার ওপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করা হয়। প্রাণ বাঁচাতে তিনি নিকটবর্তী এক দোকানে আশ্রয় নেন। সেখানেও তার দিকে ইট ও পাথর নিক্ষেপ করা হয়। স্থানীয় কিছু সচেতন ব্যক্তির হস্তক্ষেপে তিনি বড় ধরনের বিপদ থেকে রক্ষা পান।”
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী এ ঘটনাকে তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তাহীনতা ও জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনার প্রতি আঘাত হিসেবে উল্লেখ করে দ্রুত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, বিজয় দিবসের মতো দিনে একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও জুলাই আন্দোলনের অংশগ্রহণকারীকে কীভাবে এমন হেনস্তার শিকার হতে হয়?
ঘটনার একজন মুখ্য অভিযুক্ত হিসেবে মোঃ সোহেল এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যিনি উজানগ্রাম ইউনিয়নের দুর্বাচারা গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগীর দাবি, হামলাকারীরা নিজেদের ‘আওয়ামী লীগ কর্মী’ ও ‘মুজিবের সৈনিক’ বলে দাবি করে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়েছিল।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বা স্থানীয় প্রশাসনের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া এখনো পাওয়া যায়নি। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টরা ঘটনার দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত কামনা করেছেন।