স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর : আনন্দ, আবেগ ও ভবিষ্যতের প্রত্যাশায় গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গাকৃবি) গতকাল বুধবার বর্ণাঢ্য আয়োজনে পালিত হলো “গ্র্যাজুয়েশন ডে ২০২৫”। জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের ইতি টেনে নতুন দিগন্তে যাত্রা শুরু করা ডিগ্রিপ্রাপ্ত ৩১৩ জন শিক্ষার্থী এদিন ছিলেন উৎসবের কেন্দ্রবিন্দু।উল্লেখযোগ্য এই আয়োজনে অংশ নেন উইন্টার ২০২৩ টার্মের বিএস (কৃষি) প্রোগ্রামের ১৬তম ব্যাচ, বিএস (ফিশারিজ) এর ১২তম ব্যাচ, বিএস (কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ উন্নয়ন) এর ৮ম ব্যাচ এবং ডিভিএম প্রোগ্রামের ৯ম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। জাতীয় সংগীত ও পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সকাল ১০টায় দিনব্যাপী অনুষ্ঠান সূচনা হয়। পরে সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান-এর নেতৃত্বে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়।
শোভাযাত্রাটি প্রশাসনিক ভবন চত্বর থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন পথ অতিক্রম করে বেগম সুফিয়া কামাল অডিটোরিয়ামের সামনে এসে শেষ হয়। এতে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, অভিভাবক ও বিশিষ্টজনেরা অংশগ্রহণ করে উৎসবের প্রাণবন্ততা বাড়িয়ে তোলেন।
পরে অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় মূল আলোচনা সভা। এতে সভাপতিত্ব করেন ভিসি প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রো ভিসি প্রফেসর ড. এম. ময়নুল হক, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ সফিউল ইসলাম আফ্রাদ, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, পরিচালক, প্রভোস্ট, শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোঃ আবদুল্লাহ্ মৃধার স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হয় আনুষ্ঠানিক আলোচনা। চারটি অনুষদের ডিনবৃন্দ স্ব-স্ব বিভাগের ডিগ্রিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের ফলাফল উপস্থাপন করেন। শিক্ষার্থীদের পক্ষে আবেগঘন বক্তব্যে উঠে আসে তাঁদের চার বছরের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের অভিজ্ঞতা, স্মৃতি এবং শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। এরপর উপাচার্য তাদের হাতে সনদ ও ক্রেস্ট তুলে দেন।
সমাপনী বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, “আজকের এই গ্র্যাজুয়েশন ডে কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি আমাদের শিক্ষার্থীদের জীবনের এক মহান অভিযাত্রার সূচনা। কৃষিভিত্তিক জ্ঞান, গবেষণা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে তারা দেশ ও জাতির উন্নয়নে নিজেদের সক্রিয়ভাবে নিয়োজিত করবে—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।” তিনি আরও বলেন, “ তোমরা বাংলাদেশে দ্বিতীয় স্বাধীনতা এনে দিয়েছো, এখন দেশ গঠনের নেতৃত্বও তোমাদের হাতেই।”
অনুষ্ঠানের শেষে গ্র্যাজুয়েটদের সঙ্গে অতিথিবৃন্দের ফটোসেশনের মাধ্যমে দিনটির আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটে। পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে ছিল সাজ-সজ্জা, ফটো কর্নার, স্মৃতিচারণের আয়োজনসহ এক আনন্দঘন পরিবেশ। দিনটি রূপ নেয় এক মিলনমেলায়, যেখানে শিক্ষার্থীদের চোখে ছিল আনন্দ-অশ্রু আর হৃদয়ে ভেসে ছিল নতুন স্বপ্নের আলো।