রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই ক্যাম্পাসে বইছে নির্বাচনী হাওয়া। ৩৫ বছর পর হতে যাওয়া এ নির্বাচন নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। তবে এর মধ্যেই রাকসু ও হল সংসদগুলোর অবকাঠামোগত অবস্থার বেহাল চিত্র সামনে আসায় নানা প্রশ্ন উঠেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনের পেছনে অবস্থিত রাকসু ভবনে নেই কোনো নামফলক। বর্তমানে ভবনটির কক্ষগুলো ব্যবহার করছে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভবনে নামফলক না থাকায় এটি যে রাকসু ভবন-তা সহজে বোঝার উপায় নেই। মাঝে মাঝে ভবনের বাইরের অংশ রং করা হলেও কক্ষগুলো সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। শিক্ষার্থীরা বলছেন, “যে রাকসু নির্বাচনকে ঘিরে এতো আমেজ, সেই রাকসু ভবনেরই বেহাল দশা। রুমে নেই চেয়ার, টেবিল কিংবা বসার জায়গা। বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই এটি রাকসু ভবন। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর রাকসু নির্বাচন হতে যাচ্ছে, তাই প্রশাসনের দ্রুত সংস্কারকাজ শুরু করা উচিত।” রাকসু ভবনের বর্তমান অবস্থা ও নির্বাচিত প্রতিনিধিরা কোথায় বসবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে রাকসুর কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সেতাউর রহমান বলেন, “রাকসু ভবন সংস্কারের জন্য ইতোমধ্যেই একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেখানে থাকা সাংস্কৃতিক-সামাজিক সংগঠনগুলোর পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই তা বাস্তবায়িত হবে। নির্বাচনী প্রস্তুতির ব্যস্ততার কারণে উদ্যোগগুলো আগে নেয়া সম্ভব হয়নি। খুব শিগগিরই নামফলকসহ সংস্কারকাজ শেষ করা হবে।”

এদিকে রাকসু’র পাশাপাশি আবাসিক হল সংসদগুলোর অবস্থা আরো করুণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেদের ১১টি হল ও মেয়েদের ৬টি হলে এখন আর কোনো ছাত্র সংসদ কক্ষের অস্তিত্ব নেই। কোনো কোনো হলে ওই কক্ষগুলো পরিবর্তন করে ব্যবহার করা হচ্ছে পত্রিকা রুম বা রিডিং রুম হিসেবে। এ বিষয়ে বিজয় -২৪ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জামিরুল ইসলাম বলেন, “সর্বশেষ ৩৫ বছর আগে রাকসু নির্বাচন হয়েছিল। অনেক হলে ছাত্র সংসদ কক্ষ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আমি আমার বিজয়-২৪ হলে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি। খুব শিগগিরই অন্যান্য হলেও প্রাধ্যক্ষরা সংস্কারের ব্যবস্থা নেবেন।” বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দীন খান বলেন, “রাকসু ভবনের নামফলক ও অভ্যন্তরীণ সংস্কারের জন্য একটি কমিটি করা হয়েছে। সংগঠনগুলোকে কোথায় পুনর্বাসন করা যায় তা খতিয়ে দেখে প্রতিবেদন জমা দিলে আমরা কাজ শুরু করবো। আশা করছি দ্রুত নামফলক স্থাপন, সংস্কারকাজ এবং সংগঠনগুলোর পুনর্বাসন সম্পন্ন করা হবে।