রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে ১৭টি কেন্দ্রে শুরু হয়েছে এই ভোটগ্রহণ। যা চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ওএমআর ব্যালট পদ্ধতিতে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পুরো ক্যাম্পাসে নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করছে। সকাল থেকেই হলের শিক্ষার্থীরা তাদের নির্দিষ্ট ভোটকেন্দ্রে এসে জড়ো হচ্ছেন। ভোটগ্রহণের সময় হওয়ার আগেই তারা লাইনে দাঁড়িয়ে যান। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও রয়েছে কঠোর অবস্থানে। প্রতিটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে শিক্ষক, কর্মচারী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিএনসিসি, প্রক্টরিয়াল টিম দায়িত্ব পালন করছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, বহু বছর পর রাকসু নির্বাচন হওয়ায় তাদের মধ্যে আলাদা উৎসাহ কাজ করছে। তাদের প্রত্যাশা, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটের মাধ্যমে নিজেদের প্রতিনিধি বেছে নিতে পারবেন তারা। সৎ ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন প্রতিনিধি বাছাই করবেন তারা।
ভোট প্রদান শেষে অনুভূতি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী সানজিদা ইয়াসমিন মীম বলেন, ‘আজকের দিনটা স্মরণীয় একটি দিন। খুবই ভালো লাগছে, এক ধরনের অন্যরকম উত্তেজনা কাজ করছে মনে। গতকাল থেকেই পুরো ক্যাম্পাসে উৎসবের আমেজ ছিল—সবাই সবার সাথে কাকে ভোট দিবে, কে যোগ্য এসব বিষয়ে কথা বলছিল । মনে হচ্ছিল যেন কোনো উৎসব চলছে, একেবারে ঈদ ঈদ পরিবেশ। আমি জীবনের প্রথম ভোট দিয়েছি, সেটাও রাকসুর মতো ঐতিহাসিক নির্বাচনে—এটা সত্যিই গর্বের। আমি চাই যোগ্য, দায়িত্বশীল ও ছাত্রবান্ধব প্রার্থীরাই নির্বাচিত হোক, যারা সত্যিকার অর্থে সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কাজ করবে।’
এবারের রাকসু নির্বাচনে ২৩টি পদে লড়ছেন ২৪৭ প্রার্থী। এরমধ্যে ভিপি পদে ১৮, জিএস পদে ১৩ ও এজিএস পদে ১৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ছাত্রদল ও শিবির সমর্থিতসহ এ পর্যন্ত ১২টি প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে।
এবার রাকসুতে মোট ভোটার ২৮ হাজার ৯০১ জন। নারী ভোটার ১১ হাজার ৩০৫, পুরুষ ভোটার ১৭ হাজার ৫৯৬। সর্বমোট ৩০৬ জন প্রার্থী হয়েছেন রাকসু, সিনেট নির্বাচনে। হল সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন ৬০০ জন।
ভোটগ্রহণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ২ হাজার পুলিশ, ৬ প্লাটুন বিজিবি ও ১২ প্লাটুন র্যাব মোতায়েন রয়েছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, জীবনে প্রথমবার ভোট দিচ্ছি। দিনটা আমাদের জন্য খুবই আনন্দের। এভাবে প্রতিবছর রাকসু নির্বাচন হওয়া উচিত। কারণ নির্বাচন ঘীরে গত কয়েকদিন ধরে উৎসবের মধ্যে রয়েছি আমরা। আশা করবো, যারা বিজয়ী হবেন, তারা শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে কাজ করবেন।
অন্যদিকে, সুষ্ঠুভাবে ভোট প্রদানে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে প্রশাসন।