রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তালিকায় সহসভাপতি (ভিপি) ১৮ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ১৩ জন, সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) ১৬ জনসহ মোট ৩০৬ জনের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এদিকে ‘ওএমআর’ পদ্ধতিতেই ভোট গণনা করা হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
গতকাল রোববার প্রদত্ত রাকসু নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী এবারের নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সংসদের ২৩টি পদের বিপরীতে ২৬০ জন, সিনেটে ৫ জন ছাত্র প্রতিনিধি পদে ৬২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। মোট ৩২২ জন প্রার্থীর মধ্যে ৭ জনের প্রার্থিতা বাতিল করে প্রাথমিকভাবে মোট প্রার্থী ছিল ৩১৫ জন। তবে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় আছে ৩০৬ জন। রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের মোট প্রার্থী ছিল ৩২২ জন। তার মধ্যে আমরা বিভিন্ন কারণে প্রাথমিকভাবে ৭ জনের প্রার্থিতা বাতিল করেছিলাম। বিভিন্ন কারণে তাদের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে-কেউ ব্যাংক রশিদ জমা দেননি, কারো স্বাক্ষর নেই, কারো ছবি নেই, আবার অনেকের ডোপ টেস্ট রিপোর্ট নেই। পরে অনেকেই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করায় বর্তমান মোট প্রার্থী সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩০৬ জন।’
শিবির-ছাত্রদলের প্যানেল : রাকসুতে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’-এর ভিপি প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদের ব্যালট নম্বর ০৪, জিএস প্রার্থী ফাহিম রেজা লড়বেন ১০ নম্বর ব্যালট নিয়ে এবং এজিএস প্রার্থী এস এম সালমান সাব্বিরের ব্যালট নম্বর ১৫। অপরদিকে, ছাত্রদল প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) পদে শেখ নূর উদ্দীন আবীরের ব্যালট নম্বর ০৫, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে নাফিউল ইসলাম জীবনের ০৭ এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে জাহিন বিশ্বাস এষা লড়বেন ০৫ নম্বর ব্যালট নিয়ে।
ওএমআর পদ্ধতিতেই গণনা : রাকসু, সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি ও হল সংসদের ভোটগণনা হবে ওএমআর পদ্ধতিতে। গতকাল দুপুরে কোষাধ্যক্ষ কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান রাকসু প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. এফ নজরুল ইসলাম। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যানুয়ালি ভোট গণনা নিয়ে তারা কীরকম সমস্যায় পড়েছে সেইটা আমরা দেখেছি। ছাত্রদলসহ দুইটি সংগঠন ম্যানুয়ালি ভোট গণনার দাবি জানালেও তা সম্ভব নয়। কারণ, রাকসু, সিনেট ও হল সংসদ মিলিয়ে মোট ভোটার ২৮ হাজার ৯০৫ জন। হাতে গণনা করলে নির্বাচনের ফলাফল পেতে কয়েক দিন সময় লাগবে। তাই ওএমআর শিটে ভোটগ্রহণ হবে এবং ফলাফল গণনা করা হবে ওএমআর মেশিনে।”
১০২টি ইস্পাতের ব্যালট বাক্স : রাকসু নির্বাচনে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া সুষ্ঠু ও নিরাপদ করতে তৈরি করা হচ্ছে ১০২টি ইস্পাতের ব্যালট বাক্স। এক সপ্তাহের মধ্যেই এগুলো প্রস্তুত হবে বলে জানা গেছে। প্রতিটি বাক্স করতে খরচ হবে ৩ হাজার ৪শ’ টাকা করে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, “আমাদের ব্যালট পেপার যেহেতু ভাঁজ করা যাবে না, তাই বাক্স যদি স্বচ্ছ হয় তাহলে ভোটাররা কাকে কাকে ভোট দিচ্ছে সেটা বাইরে থেকে দেখা যাবে। তাই ইস্পাতের বাক্স করা হচ্ছে। আমরা এমন একটি কাজ করে দিয়ে গেলাম, যা বছরের পর বছর কাজে লাগবে বিভিন্ন নির্বাচনে।”
ভোটকেন্দ্র স্থাপন : অ্যাকাডেমিক ভবনগুলোতে ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই জানিয়ে দেয়া হবে, কোন হলের ভোট কোন অ্যাকাডেমিক ভবনে অনুষ্ঠিত হবে। ভোট গ্রহণ শেষে সবগুলো বাক্স একসাথে করে, সবাই মিলে এক জায়গায় গণনা করা হবে। এ জন্য আলাদা একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হবে। এদিকে গতকাল রোববার বিকেল ৪টায় সিনেট ভবনে মোট প্রার্থী সংখ্যা ও ব্যালট নম্বর প্রকাশ করেন রাকসু কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সেতাউর রহমান। প্রার্থীগণ সকাল ৯ থেকে রাত ১০ পর্যন্ত প্রচার প্রচারণা চলাতে পারবেন বলেও জানানো হয়।