মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার ধূলশুড়া ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী ইব্রাহিমপুর ঈশ্বরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে উৎসবের আমেজে মেতে উঠে গোটা স্কুল প্রাঙ্গন। শত বছরের গৌরবময় এই মুহূর্তকে ঘিরে প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ পরিণত হয় মিলনমেলায়।

“এসো মিলি শেকড়ের টানে” এই স্লোগানকে সামনে রেখে শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় জাতীয় সংগীতের সঙ্গে পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে শতবর্ষ উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এর আগে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে একটি বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় ক্যাম্পাসে এসে শেষ হয়।

উল্লেখ্য, ইব্রাহিমপুর ঈশ্বরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়টি ১৯২৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ এক শতাব্দী ধরে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এলাকার শিক্ষাবিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।

শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শতবর্ষ উদযাপন কমিটির আহবায়ক ডেবোনেয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিআইপি আইয়ুব খান এফসিএ। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এবং মানিকগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী আফরোজা খান রিতা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক ডঃ মোঃ কায়কোবাদ অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান পৃষ্ঠপোষক নাইয়ারা নুর রিপা, পৃষ্ঠপোষক ডঃ নরল হক চৌধুরী মনি, কাজী লুতফুর রহমান, দেওয়ান আবদুল কাদের, আবুল ফজল দোস্ত মোহাম্মদ, ইঞ্জিনিয়ার শামসুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার এ দেওয়ান হানজালা, এডভোকেট ইবাদুল আলী আকবর খান, বাবু সুবোধ চন্দ্র সরকার, প্রধান শিক্ষক আলতাফ হোসেন খান, সদস্য সচিব মোয়াজ্জেম হোসেন তুষার, কুরআন তেলাওয়াত ও বিশেষ দোয়া মুনাজাত পরিচালনা করেন হাফেজ মাওলানা খন্দকার সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ।

দিনব্যাপী আয়োজিত এই উৎসবে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন ব্যাচের প্রায় ১০ হাজার সাবেক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। দীর্ঘদিন পর প্রিয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে এসে তারা শিক্ষক ও সহপাঠীদের সঙ্গে স্মৃতিচারণায় মেতে ওঠেন।

শতবর্ষ উৎসবের অংশ হিসেবে বিকেলে একটি বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় নাচ, গান ও আবৃত্তি উপভোগ করেন উপস্থিত দর্শনার্থীরা।

শতবর্ষের এই উদযাপন শুধু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস নয়, বরং একটি অঞ্চলের শিক্ষা, ঐতিহ্য ও স্মৃতির মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে বলে মনে করছেন অংশগ্রহণকারীরা।