গোপালগঞ্জে জুলাই যোদ্ধাদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রশিবির। বুধবার (১৬ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ঢাবি কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে সমাবেশে মিলিত হয়।

বিক্ষোভ মিছিলে তারা ‘একটা একটা লীগ ধর, ধইরা ধইরা জেলে ভর’, ‘জুলাইয়ের হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার’, ‘লীগ ধর, জেলে ভর’, ‘ইসলামী ছাত্রশিবির, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’, ‘বাসের লাঠি তৈরি করো, গোপালগঞ্জ স্বাধীন কর’, ‘আওয়ামী লীগের আস্তানা, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট একশন’, ‘কথায় কথায় বাংলা ছাড়, বাংলা কি তোর বাপ দাদার? ’, ‘দিল্লি না ঢাকা? ঢাকা ঢাকা’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
সমাবেশে ঢাকা মহানগর (পূর্ব) ছাত্রশিবিরের সভাপতি আসিফ আব্দুল্লাহ বলেন, “বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের সব সন্ত্রাসীরা গোপালগঞ্জে আশ্রয় নিয়েছে। আওয়ামী লীগ জেলাটি (গোপালগঞ্জ) নিজেদের সন্ত্রাসীদের ক্যান্টনমেন্টে পরিণত করেছে। গোপালগঞ্জকে মনে হচ্ছে বাংলাদেশের কোনো জেলা নয়, মনে হচ্ছে একখণ্ড দিল্লি।”
এ সময় তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “অবিলম্বে গোপালগঞ্জের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। নয়তো গোপালগঞ্জের যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ববিরোধী এই অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে সমগ্র বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা নিয়ে মার্চ করতে বাধ্য হব।”

ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সাহিত্য ও প্রকাশন সম্পাদক এবং ঢাবি শিবিরের সাবেক সভাপতি আবু সাদিক কায়েম বলেন, “হাসিনা এবং তার দোষরদের গোপালগঞ্জে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।এই স্বাধীন বাংলাদেশে হাসিনা এবং তার দোষরদের কোনো জায়গা হবে না। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে অনুরোধ করবো, আপনারা যদি বিচার করতে না পারেন, পদত্যাগ করেন। ছাত্রজনতা দায়িত্ব নেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছে।”
তিনি আরো বলেন, “জুলাই রক্তের উপর আপনারা (অন্তবর্তী সরকার) ক্ষমতায় বসেছেন। আপনারা এখানে ভোগ-বিলাসের জন্য বসেননি। আপনারা যদি জুলাইয়ের সাথে গাদ্দারি করেন, খুনি হাসিনার যে পরিণতি হয়েছিল, তার চাইতে খারাপ পরিণতি আপনাদের হবে।”
সাদিক অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অনুরোধ করে বলেন, “শহীদদের আকাঙ্ক্ষার আলোকে জুলাইয়ের স্পিডকে ধারণ করে নতুন বাংলাদেশের জন্য সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করুন। খুনি হাসিনা এবং তার দোষরদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের আওতায় নিয়ে আসেন। ছাত্রলীগ, আওয়ামীলীগ, যুবলীগসহ সব গুণ্ডাপাণ্ডা বাংলাদেশের যে প্রান্তে আছে, তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে যথাযথ বিচারের আওতায় নিয়ে আসেন।”

ঢাবি শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি এসএম ফরহাদ বলেন, “আমরা হাসব না কাঁদব, মাঝে মাঝে খুঁজে পাই না। সারাদেশে যখন আওয়ামী লীগের ৩০০ এমপি পালিয়ে যায়, গোপালগঞ্জের গুটি কয়েকের লাফালাফি দেখে আমাদের মাঝে মাঝে হাসি পায়। আবার দুঃখ হয়, ইন্টারিম গভর্নমেন্টের এই ব্যর্থতা দেখে। ইন্টেরিম সরকারের প্রত্যেকটা প্রশাসন প্রত্যেকটা ক্যাটাগরিতে চরমতম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “আওয়ামী লীগের ক্যান্টনমেন্ট খ্যাত সব সন্ত্রাসীদের আশ্রয়দাতা যারা, গোপালগঞ্জে তারা আশ্রিত ছিল। তারা সবাই মিলে সন্ত্রাসী হামলা করেছে। ইন্টেরিম গভর্নমেন্ট এখানেও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। আমরা সুস্পষ্ট কন্ঠে ইন্টেরিম গভর্নমেন্টকে বলতে চাই, আপনারা যদি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হন আল্লাহর ওয়াস্তে দায়িত্বটা ছেড়ে দেন। বাংলাদেশে অসংখ্য তরুণ-যুবক আছে বাংলাদেশকে শাসন করবার জন্য।