যাত্রাবাড়ীর মীরহাজিরবাগে তা'মিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষার্থী ২০২৫ এর শিক্ষার্থীদের নিয়ে এক আবেগ ঘন দোয়া অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডক্টর মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানীর সভাপতিত্বে দোয়ার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ তামিরুল মিল্লাত ট্রাস্টের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম কোরবান আলী। তিনি আসন্ন আলিম পরীক্ষার্থীদের মোবারকবাদ জানিয়ে বলেন, আজকের এই দোয়া মাহফিল শুধু একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়; বরং এটি আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তনের, তাঁর সাহায্য প্রার্থনার একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ। তিনি শিক্ষার্থীদেরকে আল্লাহর ওপর ভরসা, নিয়মিত নামাজ আদায়, বাবা-মায়ের দোয়া গ্রহণ এবং আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার উপদেশ দেন।
তিনি বলেন, পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ই সফলতার চাবিকাঠি। ইলম অর্জন করা একটি ইবাদত, আর তা সঠিক নিয়তে করলে তা দুনিয়া ও আখিরাতের সাফল্যের পথ খুলে দেয়। পরীক্ষাকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, বরং এটিকে একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।
প্রধান আলোচক ছিলেন তাম্রিল মিল্লাতের সাবেক সফল সেক্রেটারি, বর্ষিয়ান আলেমেদীন সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা যাইনুল আবেদীন। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, তোমরা এখন জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে অবস্থান করছো। আলিম পরীক্ষা শুধু একটি শিক্ষাগত স্তর নয়, এটি একটি নৈতিক ও আত্মিক পরীক্ষাও বটে। যারা আলিম হয়, তাদের কাঁধে দ্বীনের দায়িত্ব অর্পিত হয়। তাই এখন থেকেই নিজেকে একজন আদর্শ মুছলিম, আল্লাহভীরু আলেম হিসেবে গড়ে তোলার সংকল্প করতে হবে। অধ্যবসায়, ধৈর্য, ও সৎচিন্তা – এই গুণগুলো তোমাদের জীবনে আলোর পথ দেখাবে।
সভাপতির বক্তব্যে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী বলেন, আলিম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের এই দোয়া মাহফিল আমাদের জন্য এক আবেগঘন মুহূর্ত। এতদিন তোমাদের সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক গড়ে উঠেছে, তা শুধুমাত্র শিক্ষক-শিক্ষার্থীর নয়, বরং পিতৃতুল্য ভালবাসার সম্পর্ক। এটি কোন বিদায় অনুষ্ঠান নয় বরং উচ্চ ডিগ্রী অর্জনের আরেকটি ধাপ শুরু হল।
তোমরা যেন পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করো, তবে তার চেয়েও বড় কথা – তোমরা যেন একজন চরিত্রবান, দ্বীনদার ও দেশসেবক মানুষ হও।
তিনি বলেন আদর্শ বা চরিত্রবান মুত্তাকী এবং পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলে আখেরাতমুখি জীবনযাপনের অভ্যস্ত হতে হবে।
আল্লাহর ওপর সম্পূর্ণ ভরসা রাখো, তাঁর প্রতি গভীর ভালোবাসা রাখতে হয়। যে আল্লাহ এতদিন তোমাদেরকে রক্ষা করেছেন, তিনি আগামীতেও অবশ্যই সঠিক পথ দেখাবেন। পরীক্ষা শেষে যেন তোমরা সফলভাবে অনার্স ও কামিল শ্রেণির পথে অগ্রসর হতে পারো, এই আমাদের কামনা। আলিম পরীক্ষার পর তোমাদেরকে নিয়ে ছাত্রছাত্রী পৃথক পৃথক এরাবিক ও ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্স করে দক্ষ করার বিশেষ পরিকল্পনা আমাদের আছে।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট মুফাসসির আবুল কাশেম গাজী, মুফাসসির জাকির হোসাইন শেখ, ছাত্রনেতা মাওলানা হেলাল উদ্দিন, ছাত্র সংসদের ভিপি আব্দুর রহমান ।
মাদ্রাসার সম্মানিত শিক্ষকমন্ডলী এবং আলিম পরীক্ষার্থী ছাত্রবৃন্দ এবং বালিকা ক্যাম্পাসে আলাদাভাবে ছাত্রী এবং শিক্ষিকাগণ উপস্থিত ছিলেন।