হাওর অঞ্চলের কৃষকদের স্বল্পমেয়াদি ধান চাষে আগ্রহ তৈরিতে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গাকৃবি) বিশেষ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসিওরেন্স সেল (আইকিউএসি) সেমিনার কক্ষে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
“বাংলাদেশের হাওর (মিঠা পানির জলাভূমি) অঞ্চলে আকস্মিক বন্যাপ্রবণ পরিবেশে কৃষকদের স্বল্প-মেয়াদি ধান চাষে আগ্রহ বুঝার বিষয়ে ফলাফল প্রকাশনা কর্মশালা" শিরোনামে আয়োজিত এই কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন গাকৃবির কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ উন্নয়ন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. কাজী তামিম রহমান। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাকৃবির ভিসি প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন গাকৃবির উপ-ভিসি প্রফেসর ড. এম. ময়নুল হক এবং ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ সফিউল ইসলাম আফ্রাদ।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মোঃ সাদিক রহমান, যিনি এ প্রকল্পের প্রধান। সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন প্রকল্পের সহযোগী পি-আই এবং গাকৃবির এগ্রিবিজনেস বিভাগের প্রফেসর ড. দেবাশিস চন্দ্র আচার্য্য।
কর্মশালায় গাকৃবির বিভিন্ন অনুষদের ডিন, পরিচালকবৃন্দ, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি), বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) এবং জাতীয় কৃষি প্রশিক্ষণ একাডেমি (নাটা) থেকে আগত বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।
প্রবন্ধ উপস্থাপনায় দেখা যায়, কিশোরগঞ্জের হাওর এলাকায় গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, স্বল্পমেয়াদি বোরো ধানের জাতসমূহ আকস্মিক বন্যা থেকে রক্ষা করার উপযোগী হলেও, অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক না হওয়ায় কৃষকরা এতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। গবেষণায় আরও উল্লেখ করা হয়, হেক্টরপ্রতি উৎপাদন খরচ যদি ৮০০০ টাকা কমানো যায় অথবা ফলন ১১২ কেজি বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়, তাহলে কৃষকরা লাভবান হবে। এছাড়া, কম খরচে উৎপাদনযোগ্য ধানের জাত উদ্ভাবনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
গবেষণায় সুপারিশ করা হয়, সমগ্র হাওর এলাকার পরিবর্তে নির্দিষ্ট এলাকা ভিত্তিক সম্প্রসারণ কৌশল গ্রহণ করা উচিত।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের পর ভিসির পরিচালনায় একটি উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে গাকৃবির ভিসি বলেন, “এই কর্মশালা হাওর অঞ্চলের কৃষকদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কৃষির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে কীভাবে আমরা বন্যাপ্রবণ পরিবেশে কৃষকদের জন্য উপযোগী ধান চাষের পদ্ধতি উদ্ভাবন করতে পারি। আজকের গবেষণা কৃষকদের স্বল্পমেয়াদি ধান চাষে উৎসাহিত করার জন্য নতুন দিকনির্দেশনা প্রদান করবে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, কৃষকদের জন্য এমন প্রযুক্তি ও কৃষি পদ্ধতি প্রবর্তন করা যা তাদের আবাদী জমি বন্যা ও দুর্যোগের প্রভাব থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে।