স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুরঃ

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএআরআই)-এর “ফার্ম মেশিনারি অ্যান্ড পোস্টহারভেস্ট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ-এর বাস্তবায়নে এবং গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (গাকৃবি)-এর সার্বিক সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হলো দিনব্যাপী এক বিশেষ সেমিনার ও কৃষি যন্ত্রপাতি প্রদর্শনী মেলা। “কৃষি যান্ত্রিকীকরণে বিএআরআই-এর উদ্ভাবন ও অবদানচ্ শীর্ষক এ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় তিনটি পৃথক ইভেন্ট—পোস্টার প্রদর্শনী, সেমিনার ও আধুনিক কৃষিযন্ত্র প্রদর্শনী।

রোববার(২২ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন অডিটোরিয়ামে সেমিনার পর্ব শুরু হয়। সভাপতিত্ব করেন মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও “এফএমডিপি প্রকল্পের পরিচালক ড. মা. নূরুল আমিন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাকবির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. জি. কে. এম. মোস্তাফিজুর রহমান। গেস্ট অব অনার ছিলেন প্রোভিসি অধ্যাপক ড. এম. ময়নুল হক এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. সফিউল ইসলাম আফ্রাদ, কৃষি ও বায়ারিসোর্সেস ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মা. এমদাদুল হক এবং ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মাহাম্মদ সাইফুল আলম।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএআরআই-এর ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মাহাম্মদ এরশাদুল হক। তার উপস্থাপনায় তিনি বাংলাদেশের কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণের অগ্রগতি, শ্রম ও খরচ সাশ্রয়ের সুযোগ এবং বিএআরআই উদ্ভাবিত কৃষিযন্ত্রের কার্যকারিতা তুলে ধরেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএআরআই-এর বিজ্ঞানী ড. মা. আশরাফুজ্জামান গালদাজ, গাকবির বিভিন্ন বিভাগের প্রায় ২০০ জন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী।

আলোচনায় বক্তারা বলেন, বিএআরআই উদ্ভাবিত আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার কৃষকদের সময়, খরচ ও পরিশ্রম কমিয়ে অধিক লাভবান হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এ প্রযুক্তির বিস্তারে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলেও মত দেন তাঁরা।

সেমিনারের পাশাপাশি “ফার্ম মেকানাইজেশন আইডিয়া কম্পিটিশন-এ বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। তারা কৃষির আধুনিকায়ন ও চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের আলোকে ছয়টি উদ্ভাবনী পোস্টার উপস্থাপন করেন। সেরা তিনটি পোস্টার উপস্থাপকের মধ্যে যথাক্রমে ১৫ হাজার, ১০ হাজার ও ৫ হাজার টাকা পুরস্কার এবং সনদ প্রদান করা হয়।

সমাপনী বক্তব্যে গাকবির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. জি. কে. এম. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “কৃষি যান্ত্রিকীকরণ শুধু প্রযুক্তির প্রয়োগ নয়, এটি কৃষকের মুখে হাসি ফোটানোর আধুনিক পথ। বিএআরআই এই যাত্রায় নিরলসভাবে কাজ করছে এবং গাকবির শিক্ষার্থীরাও গবেষণায় অংশ নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অবদান রাখতে সক্ষম হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

সভাপতির বক্তব্যে ড. মা. নূরুল আমিন বলেন, “বিএআরআই ইতোমধ্যে ৫৫ প্রকার কৃষিযন্ত্র উদ্ভাবন করেছে এবং তা দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অগ্রণী ভূমিকা প্রত্যাশিত।

সেমিনার শেষে উপাচার্য বিএআরআই উদ্ভাবিত কৃষিযন্ত্রের প্রদর্শনী মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন এবং বিজ্ঞানী ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে মেলা পরিদর্শন করেন।