বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ভিসি ড. শুচিতা শরমিনের পদত্যাগের একদফা দাবিতে চলমান আন্দোলনের সাথে সংহতি প্রকাশ করে অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশ। এছাড়াও আন্দোলনকারীরা পরবর্তী কর্মসূচি হিসেবে আজ শুক্রবার অনুষ্ঠিতব্য বিজ্ঞান শাখার ‘এ’ ইউনিটের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় উপাচার্যকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেন। পদত্যাগের দাবি মেনে নেওয়া না হলে সোমবার থেকে ক্লাস বর্জনেরও হুঁশিয়ারি দেন তারা।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে শিক্ষার্থীদের নেওয়া অবস্থান কর্মসূচিতে এসে যোগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ জনের অধিক শিক্ষক। এসময়ে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়৷ পরে অবস্থান কর্মসূচি শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল গ্রাউন্ড ফ্লোর থেকে শুরু হয়ে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় গ্রাউন্ড ফ্লোরে এসে শেষ হয়।

অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহসিন উদ্দিন, কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফিজ আশরাফুল হক, বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সরকার ও সহকারী অধ্যাপক উন্মেষ রয়, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এটিএম রফিকুল ইসলাম, লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সিরাজিস সাদিকসহ অন্যান্যরা।

শিক্ষকবৃন্দ বলেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির সকল স্বৈরাচারী ও অপেশাদার আচরণ, দুর্নীতিগ্রস্ততা এবং মারাত্মক অদক্ষতার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টি দিনদিন চরম অধোগতির দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের দাবিনামার সাথে আমরা একাত্মতা পোষণ করছি এবং বিশ্ববিদ্যালয়টিকে এই অধোগতি ও ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য শিক্ষাপ্রশাসনের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের প্রতি বিনীত আহ্বান জানাচ্ছি।

মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সুজয় বিশ্বাস শুভ বলেন, আমরা আশা করি দ্রুতই ইউজিসি ও আচার্য (রাষ্ট্রপতি) বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা দূর করার জন্য ব্যবস্থা নিবেন। আগামীকালের গুচ্ছ পরীক্ষা উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে সফল করা আমাদের এই মুহূর্তের প্রধান কর্মসূচি।

এ বিষয়ে জানার জন্য প্রক্টর ড. সোনিয়া খান সোনিকে ফোন করা হলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে জানান এবং কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

এর আগে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ভিসি অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন জানতে চাইলে বলেন, “শিক্ষার্থীদের দাবি সিন্ডিকেট মিটিংয়ে মেনে নেওয়ার পরও কিছু শিক্ষার্থী নতুন নতুন দাবি তুলে আন্দোলন করছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা এতে নেই। যারা আন্দোলন করছে তারা বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার জন্য ইন্ধন দিচ্ছে, এবং দিন দিন সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের ওপর বিরক্ত হয়ে উঠছে। যে বা যারা ইন্ধন দিয়ে আন্দোলন করাচ্ছে তাদেরকে সহজেই ছেড়ে দেয়া হবে না।” উল্লেখ্য, আজ আন্দোলন চলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা কেন্দ্রের পরিচালক সুজন চন্দ্র পাল এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির লাইব্রেরীয়ান ড. গাজী জহিরুল ইসলাম পদত্যাগ করেছেন। এর আগে দুই ছাত্র হলের প্রভোস্ট পদত্যাগ করেন।