রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘জুলাই ৩৬’ হলের ৯১ জন ছাত্রীকে শাহ মখদুম হল ছাত্রদলের সহ-সভাপতি এ. আর. মিলন খান কর্তৃক ‘বিনা পারিশ্রমিক যৌনকর্মী’ আখ্যা দিয়ে কটূক্তি করার ঘটনায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রশিবির মানববন্ধন করেছে। গত বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন শ্লোগান দেন-
‘দায় চাপানোর রাজনীতি বন্ধ করতে হবে’,
‘ধর্ষকদের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না’,
‘চাঁদাবাজ আর স্বৈরাচার, মিলেমিশে একাকার’,
‘শিবিরের অঙ্গীকার, নিরাপদ ক্যাম্পাস’,
‘নারী হেনস্থা বন্ধ করতে হবে’।
শিবিরের নেতাকর্মীরা বলেন, “রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য করে অন্যদের ওপর দায় চাপানোর রাজনীতি চলছে। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সংবাদ সম্মেলনে বসে ছাত্রশিবিরের ওপর দায় চাপানোর অপচেষ্টা চালিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা এ দায় চাপানোর রাজনীতিকে লাল কার্ড দেখিয়েছে।”
মানববন্ধনে ইবি শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ইউসুফ আলী বলেন, “৫ আগস্টের পর থেকে একটি মহল দেশকে নিজেদের সম্পত্তি মনে করে নানা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটাচ্ছে। রাবির ছাত্রদল নেতা নারী শিক্ষার্থীদের যৌনকর্মী বলে আখ্যা দিয়েছেনÍ আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। সারাদেশে ধর্ষণ, চাঁদাবাজি ও সহিংসতার বিরুদ্ধে আমরা প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ছাত্রদল আদর্শিকভাবে পরাজিত হয়ে শিবিরের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমরা বলতে চাই, আদর্শিক লড়াইয়ে আসুন, অপপ্রচারে নয়।”
তিনি আরও বলেন, “ছাত্রদল আবার ’৯০-এর দশকের রাজনীতিতে ফিরতে চাইছে, পেশিশক্তি দেখাতে চাইছে। কিন্তু ছাত্রশিবির তুলা নয় যে, ফুঁ দিলেই উড়ে যাবে। আমাদের ভিত্তি দেশের মাটির গভীরে। আমাদের বিরুদ্ধে ‘জবাই’ স্লোগান দেয়া হচ্ছে, কেন্দ্রীয়ভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আমরা চাই এমন ক্যাম্পাস যেখানে প্রতিটি শিক্ষার্থী নিরাপদ থাকবে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল হামলা চালিয়েছে যা অপ্রত্যাশিত। যদি এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ না হয়, তবে ছাত্রলীগের মতো তারাও একই পরিণতির মুখে পড়বে।”
উল্লেখ্য, রাবির ‘জুলাই ৩৬’ হলে নির্ধারিত সময়ের পরে প্রবেশ করায় গত সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) ৯১ জন ছাত্রীকে নোটিশ দিয়ে তলব করেন হল প্রাধ্যক্ষ। এ ঘটনায় ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপের পোস্টের নিচে ওই ৯১ জন ছাত্রীকে ‘বিনা পারিশ্রমিক যৌনকর্মী’ বলে কটূক্তি করেন শাহ মখদুম হল শাখা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আনিসুর রহমান মিলন।