বিশ্ব মেধাস্বত্ব (ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি) দিবস ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে মানুষের সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনী অবদানকে সম্মান ও স্বীকৃতি জানানোর লক্ষ্যে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গাকৃবি) এক বর্ণাঢ্য সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (২১ এপ্রিল) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসিওরেন্স সেল (আইকিউএসি) এর সেমিনার কক্ষে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

আইকিউএসির উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গাকৃবির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান। দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সর্বপ্রথম গাকৃবিতে বিশ্ব মেধাস্বত্ব দিবস উপলক্ষে এমন সেমিনার আয়োজন একটি দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে।

সেমিনারের প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য প্রফেসর ড. মাছুমা হাবিব। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. এম. ময়নুল হক এবং ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ সফিউল ইসলাম আফ্রাদ।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য দেন আইকিউএসি পরিচালক প্রফেসর ড. নাসরীন আক্তার আইভী। এরপর মেধাস্বত্ব অধিকার নিয়ে তথ্যবহুল মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের পরিচালক এবং সেমিনারের কী-নোট স্পিকার প্রফেসর ড. মোঃ গোলাম রসুল। তিনি পেটেন্ট, কপিরাইট, ট্রেডমার্ক, শিল্প ডিজাইনসহ বিভিন্ন মেধাস্বত্বের ধরণ ও এর গুরুত্ব তুলে ধরেন। পাশাপাশি, উদ্ভাবন ও শিল্প-সাহিত্যকে কীভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক অগ্রগতির হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগানো যায়—সেই বিষয়েও বক্তব্য রাখেন।

সেমিনারে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয় গাকৃবির উদ্ভাবিত জাত ও প্রযুক্তিসমূহের আন্তর্জাতিক মেধাস্বত্ব অধিকার অর্জনের বিষয়ে। এ প্রসঙ্গে গঠিত হয় এক উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর পর্ব, যেখানে বিভিন্ন অনুষদের অধ্যাপকগণ তাদের মতামত ও প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।

অতিথির বক্তব্যে ড. মাছুমা হাবিব বলেন, “বর্তমান বিশ্বে টেকসই উন্নয়নের জন্য গবেষণা ও উদ্ভাবন অপরিহার্য। মেধাস্বত্ব সেই উদ্ভাবনকে সুরক্ষা দিয়ে গবেষকদের উৎসাহিত করে। কৃষি খাতেও এর যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা ও উৎপাদনশীলতা নিশ্চিত করা সম্ভব।চ্ তিনি গাকৃবিকে এ খাতে ইউজিসির সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

সভাপতির বক্তব্যে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণালব্ধ উদ্ভাবনসমূহকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দিতে হলে আমাদের টেকনোলজি ট্রান্সফার অফিস (টিটিও) স্থাপন করতে হবে। এটি গঠনের মধ্য দিয়ে আমরা মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের পাশাপাশি তা বাজারজাতের পথও সুগম করতে পারব।চ্ এ লক্ষ্যে তিনি উপস্থিত সকলের সহযোগিতা এবং ইউজিসির সহায়তা প্রত্যাশা করেন।

উল্লেখ্য, ২০০০ সাল থেকে প্রতি বছর ২৬ এপ্রিল বিশ্ব মেধাস্বত্ব দিবস আন্তর্জাতিকভাবে উদযাপন করা হয়। এবছরের প্রতিপাদ্য— “মেধাস্বত্ব এবং সঙ্গীত: মেধাস্বত্বের তাল অনুভব করুনচ্—এর আলোকে সেমিনারটি আয়োজন করা হয়।