ইবি সংবাদদাতা:

জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন দমনচেষ্টা, আন্দোলনকারী ছাত্র-শিক্ষদের হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ১৯ শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সোমবার (১৮ আগস্ট) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক। অভিযুক্ত সকলকে রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত পৃথক নোটিশে আগামী ১০ কার্য দিবসের মধ্যে কারণ জানানোর জন্য বলা হয়।

শোকজকৃত শিক্ষকরা হলেন- ইইই বিভাগের অধ্যাপক ও সাবেক প্রক্টর ড. মাহবুবর রহমান, ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো: মাহবুবুল আরফিন, আইসিটি বিভাগের অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মন ও ড. তপন কুমার জোদ্দার; ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এইচ এম আক্তারুল ইসলাম, ড. মিয়া মো. রাসিদুজ্জামান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. আফরোজা বানু; বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. রবিউল হোসেন ও ড. মো: বাকী বিল্লাহ, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যপদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী আখতার হোসেন ও ড. শেলীনা নাসরীন, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা, আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহজাহান মণ্ডল ও ড. রেবা মণ্ডল, সিএসই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জয়শ্রী সেন, আল-ফিকহ এন্ড ল’ বিভাগের অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসেন, ল’ অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী হাসান এবং মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো: মাজেদুল হক।

শোকজের চিঠিতে বলা হয়েছে- ‘গত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারকে বিতাড়নের লক্ষ্যে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হুমকি-ধমকি, ভীতি প্রদর্শন, মারমুখী আচরণ, গালাগালি, মিছিলে উষ্কানিমূলক শ্লোগান প্রদান এবং পুলিশী প্রেফতার ও হয়রানি বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আন্দোলনের বিপরীতে প্রত্যক্ষভাবে লিপ্ত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমতাবস্থায় ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কেন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না এ মর্মে আগামী ১০ (দশ) কার্য দিবসের মধ্যে রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিতভাবে কারণ দর্শানোর জন্য আহ্বান জানানো হয় ।’

এদিকে একই অভিযোগে ৩১ জন শিক্ষার্থী ও ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি শাস্তির সুপারিশ করলেও সে তালিকা এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

এ ব্যাপারে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক সংগ্রামকে বলেন, “তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ১৯ জন শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে। কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। সুপারিশ অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধেও পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরোধী ভূমিকা নেওয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিহ্নিত করতে চলতি ১৬ ই মার্চ অধ্যাপক ড. মো: আখতার হোসেনকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করে প্রশাসন। কমিটিকে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে উপাচার্যের কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হলেও পরবর্তীতে সময় বৃদ্ধি করে গত ১৩ আগস্ট প্রতিবেদন জমা দেয়।