ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে ‘১৫ আগস্ট ইসলামী শিক্ষা দিবস' উপলক্ষে তিনদিন ব্যাপী আন্ত:হল সংসদীয় বিতর্ক চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়না চত্বরে বিতর্কৈর চূড়ান্ত পর্ব শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
এসময় শাখা শিবির সভাপতি মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম। বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সাবেক জাতীয় টিভি বিতার্কিক মোহাম্মদ খালিদ হাসান, ইবি ডিবেটিং সোসাইটির সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য ডিবেটিং ও টিভি বিতার্কিক মো: সাইফুর রহমান, স্পিকার হিসেবে ছিলেন ইবি ডিবেটিং সোসাইটির সদস্য সচিব মোঃ দিদারুল ইসলাম রাসেল। এছাড়াও সময় নিয়ন্ত্রক হিসেবে ছিলেন সাবরিন।
জানা গেছে, তিনদিনে তিনটি পর্বে আয়োজিত প্রতিযোগিতাটির আজ চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে অংশ নিয়েছে শাহ আজিজুর রহমান হল, শহীদ জিয়াউর রহমান হল, সাদ্দাম হোসেন হল, লালন শাহ হল, শহীদ আনাস হল, জুলাই-৩৬ হল, উম্মুল মুমিনিন আয়েশা সিদ্দিকা হল ও বেগম খালেদা জিয়া হল ডিবেটিং সোসাইটিসহ চারটি ছাত্রহল এবং তিনটি ছাত্রীহলের মোট আটটি বিতর্ক দল।
সংসদীয় পদ্ধতিতে আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতার আজকের চূড়ান্ত পর্বে বিতর্কের শিরোনাম ছিলো “প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের মানসিকতায় নতুনত্ব আনতে ব্যর্থ” যেখানে সরকারি দলের ভূমিকায় ছিল লালন শাহ হল এবং বিরোধী দলের ভূমিকায় ছিলো বেগম খালেদা জিয়া হল ডিবেটিং সোসাইটি। বিতর্ক শেষে বিচারকদের রায়ে বিরোধী দলকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এতে সেরা বিতার্কিক হন প্রধানমন্ত্রী মুশফিকুর রহমান ও বিরোধী দলীয় নেতা মুমতাহিনা রিনি।
বিতর্কে স্পিকার হিসাবে দায়িত্ব পালন করা দিদারুল ইসলাম রাসেল বলেন “বিতর্ক কেবল প্রতিযোগিতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি হলো শিষ্টাচার, যুক্তি ও জ্ঞানচর্চার এক অনন্য ক্ষেত্র। এখানে জয় বা পরাজয় মুখ্য নয়, বরং যুক্তি দিয়ে সত্য অনুসন্ধান, ভিন্নমতকে সম্মান করা এবং মুক্তচিন্তার চর্চাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য। তরুণদের মাঝে এই মানসিকতা গড়ে তুলতে বিতর্কের ভূমিকা অপরিসীম।”
বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজন কমিটির আহ্বায়ক এবং শাখা শিবিরের আন্তর্জাতিক ও বিতর্ক সম্পাদক হাসানুল বান্না অলি বলেন, “স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বিতর্কের মাধ্যমে দাওয়াতি কাজ করার জন্য আল্লাহর রসুলকে নির্দেশনা দিয়েছেন। তাই বিতর্কের মাধ্যমে সত্যকে উপস্থাপন করা যায় ভিন্নভাবে। মূলত বিতর্ক নতুনত্বের পথকে উন্মুক্ত করে দেয়। আর ইসলামী ছাত্রশিবির চায় মানুষের কাছে সত্য ও সুন্দর টা পৌঁছে যাক।এরই ধারাবাহিকতা আমাদের এই আন্তঃ হল সংসদীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন।”
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, “একটা জাতিকে যদি গড়ে তুলতে হয় তাহলে জাতির মধ্যে লজিক থাকতে হবে। কেন এটা হয়ছে? আমার দেশ কেন এরকম হলো? এই প্রশ্নগুলো যখন মানুষ ছুঁড়তে পারে তখন দেশ ক্রমাগত সমৃদ্ধির দিকে যেতে থাকে। আমরা উন্নত রাষ্ট্রগুলোতে দেখে থাকি কোন আইন পাশ করার আগে তাদের ছায়া সংসদে তার যৌক্তিকতা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে বিতর্ক হয়। আর এই যোগ্যতা তৈরি হবে ডিবেটের মাধ্যমে।
তিনি আরো বলেন, একজন ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্ট হবে ইউনিভার্সাল নলেজ ক্যাপাসিটি সম্পন্ন। কারণ এইটা নলেজ ক্রিয়েশনের জায়গা। এই জায়গা থেকে আমি আপনাদেরকে আহ্বান জানাবো আপনাদের ডিবেট ক্লাবগুলোতে আসা উচিত, ডিবেট চর্চা করা উচিত, এতে আপনাদের নিজের জায়গাটা বুঝতে পারবেন, নিজের নলেজ লেভেলটা ভালো গেইন করতে পারবেন।