স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুরঃ
গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গাকৃবি) অনুষ্ঠিত “সামুদ্রিক মাছ থেকে মূল্য সংযোজিত মৎস্যপণ্য উৎপাদন, স্থায়ীত্বকাল বৃদ্ধি এবং বাণিজ্যিকীকরণ বিষয়ক বিশেষ কর্মশালার গতকাল ছিল শেষ দিন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ টেকনোলজি বিভাগের আয়োজনে এবং মৎস্য অধিদপ্তর, ঢাকার অধীন সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের অর্থায়নে কর্মশালাটির সমাপনী বুধবার সকালে গাকৃবির পুরাতন অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের বিশাল সামুদ্রিক সম্পদকে কাজে লাগিয়ে টেকসই মৎস্যখাত গড়ে তোলারঅঙ্গীকার নিয়ে মেলার সমাপনী টানা হয়।
কর্মশালার প্রধান লক্ষ্য ছিল সামুদ্রিক মাছের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর, মূল্য সংযোজিত মৎস্যপণ্য তৈরির কৌশল ও উদ্যোগকে ত্বরান্বিত করা। বিশেষ করে সামুদ্রিক ম্যাকারেল মাছ থেকে বার্গার ও টুনা মাছ থেকে আচার তৈরি করে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বৃদ্ধি, দেশীয় উদ্যোক্তা তৈরি ও উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করাই ছিল কর্মশালার মূল উদ্দেশ্য।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গাকৃবির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন গাজীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, শেখ মনিরুল ইসলাম মনির। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. এম. ময়নুল হক, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ সফিউল ইসলাম আফ্রাদ এবং মৎস্য অধিদপ্তর ঢাকার গ্র্যান্ট ম্যানেজমেন্ট স্পেশালিস্ট মোঃ আমিনুল ইসলাম।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফিশারিজ টেকনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও প্রকল্পের প্রধান গবেষক ড. মোঃ গোলাম রসুল। তিনি সামুদ্রিক মাছের আধুনিক প্রক্রিয়াজাতকরণ, সংরক্ষণ পদ্ধতি ও বাণিজ্যিক সম্ভাবনা বিষয়ে বিশদ আলোচনা করেন। তাঁর উপস্থাপনায় ম্যাকারেল মাছ থেকে বার্গার এবং টুনা মাছ থেকে আচার তৈরির প্রযুক্তিগত ধাপ বাস্তব উদাহরণসহ তুলে ধরা হয়, যা উদ্যোক্তাদের মধ্যে বিশেষ আগ্রহ সৃষ্টি করে।
কর্মশালায় গাজীপুরের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত উদ্যোক্তা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, গবেষক, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডাররা অংশগ্রহণ করেন। উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশগ্রহণকারীদের মতামত ও পরামর্শ কর্মশালাকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভাইস-চ্যান্সেলর বলেন, “বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমা এক অনন্য সম্ভাবনার ভাণ্ডার। বিজ্ঞানসম্মত ও প্রযুক্তিনির্ভরভাবে এ সম্পদ ব্যবহারের মাধ্যমে দেশে একটি শক্তিশালী ব্লু-ইকোনমি গড়ে তোলা সম্ভব।তিনি আরও বলেন, “শুধু মাছ ধরা নয়, বরং প্রক্রিয়াজাতকরণ, মান নিয়ন্ত্রণ, ব্র্যান্ডিং ও রপ্তানিমুখী কৌশলই হতে পারে ভবিষ্যৎ মৎস্যখাতের প্রধান চালিকাশক্তি, এবং গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সে লক্ষ্যেই অগ্রসর হচ্ছে।
সভাপতির সমাপনী বক্তব্যে গাজীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শেখ মনিরুল ইসলাম মনির বলেন, এ ধরনের কর্মশালা গবেষণা, বাস্তব প্রয়োগ ও বাণিজ্যিক উদ্যোগের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে মৎস্যখাতে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেবে।