রাবি রিপোর্টার: গতকাল মঙ্গলবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বিতরণের শেষ দিন রাকসু নির্বাচনকে ঘিরে ছাত্রদল ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা পাল্টাপাল্টি অবস্থান নেয়। এসময় কিছু বহিরাগতদের ভিড় করতে দেখা যায়। এসময় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
একদিকে ছাত্রদলের আন্দোলন, অন্যদিকে সাধারণ শিক্ষার্থী ও মনোনয়ন প্রত্যাশীদের অবস্থান-এই পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে দিনভর উত্তপ্ত ছিল ক্যাম্পাস। সকাল ৯টার দিকে প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা রিটার্নিং অফিসারের কক্ষ থেকে মনোনয়নপত্র ও নথি ছিনিয়ে নেয়। এরপর তারা রাকসুর কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান নেয়। এসময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে এলে তাকে অবরুদ্ধ করে ছাত্রদল। মনোনয়ন প্রত্যাশী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে আসলে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কিতে পরিস্থিতি আরো উত্তেজনাকর হয়ে ওঠে। বহিরাগত ছাত্রদল-যুবদলের কয়েকজন নেতাকর্মীর উপস্থিতি পরিস্থিতি আরো জটিল করে তোলে, যা শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ বাড়ায়। প্রায় ৪ ঘণ্টা অচলাবস্থার পর দুপুর ২টার দিকে শিক্ষার্থীরা তালা ভেঙে কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ে প্রবেশ করে। এরপর পুনরায় মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হয়। এসময় সাধারণ শিক্ষার্থী, ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মী এবং বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহীর নেতৃত্বে সকাল থেকেই আন্দোলন চলে। এসময় নির্বাচন কমিশনের অফিসে চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর এবং অফিসে তালা লাগানোর অভিযোগ ওঠে তাদের বিরুদ্ধে। তবে রাহী দাবি করেন, “আমরা কোনো ভাঙচুর করিনি, শুধু টেবিল সরিয়ে দেয়া হয়েছে। দাবি না মানা পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে।” বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, “আমরা দুই পক্ষকেই সহনশীল থেকে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানিয়েছি। আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চলছে। তবে নির্বাচন কার্যক্রম কোনোভাবেই ব্যাহত করা যাবে না।” বিকেলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে রাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মুজাহিদ ফয়সাল বলেন, “এটা প্রশাসনের ব্যর্থতা। সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করলে নির্ধারিত তারিখেই নির্বাচন সম্ভব। যদি কেউ নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে এসব ইস্যু সামনে আনে তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাবধান থাকতে হবে।” তিনি আরো বলেন, “জুলাইয়ের চেতনা এখনো শিক্ষার্থীদের মধ্যে আছে। যারা তালা মেরে নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছিল, সাধারণ শিক্ষার্থীরাই তাদের প্রতিহত করেছে।” এদিকে সন্ধ্যায় সিনেট ভবনে রাকসুর মনোনয়ন ফর্ম উত্তোলনকারীদের সাথে নির্বাচন কমিশনের জরুরি আলোচনা থেকে বাম সংগঠনের সঙ্গে ছাত্রদল একাত্ম হয়ে সিনেট ভবন থেকে বেরিয়ে যায়।