জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গাছ কেটে ভবন নির্মাণের পরিকল্পনার তীব্র সমালোচনা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের দপ্তর সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম। শনিবার (২০ এপ্রিল) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, “জাহাঙ্গীরনগরকে ‘ঢাকা’ হতে দেওয়া যাবে না।”
পোস্টে তিনি লেখেন, “আমাদের ক্লাসরুম সংকট আছে—এটি বাস্তবতা। সংকট নিরসনে প্রয়োজনীয় বিল্ডিং নির্মাণ করাও জরুরি। কিন্তু যত্রতত্র, পরিকল্পনা ছাড়া খেয়ালখুশিমতো উন্নয়ন আমাদের কোনো ‘জাহান্নামে’ নিক্ষেপ করতে পারে, সেটা ঢাকার দিকে তাকালেই স্পষ্ট বোঝা যায়। সামান্য একটি ৬ মাত্রার ভূমিকম্পেই ঢাকা শহর ধ্বংস হয়ে যেতে পারে—এই আশঙ্কা নিয়েই আমাদের দিন কাটাতে হয়।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “জাহাঙ্গীরনগরে তিন বছর ধরে কোনো অতিথি পাখি আসে না। এটি নিছক কোনো কাকতালীয় ঘটনা নয়, বরং দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা ও অবহেলার ফল। অথচ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ মাস্টারপ্ল্যান, কেন্দ্রীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, রিজার্ভ এলাকা, আবাসিক ও একাডেমিক এলাকা চিহ্নিত থাকার কথা ছিল। কিন্তু এসব উপেক্ষা করে শুধু বিল্ডিং দেখানোর জন্য উন্নয়ন চালানো হলে পুরো ক্যাম্পাসই একদিন ঢাকায় পরিণত হবে।”
তিনি লিখেন, “আমাদের একটি কলা ভবন ছিল, তারপর তৈরি হলো ‘নতুন কলা’। তাতেও শেষ হয়নি, এখন আবার হচ্ছে ‘নতুন নতুন কলা’। ২০১৯ সালের গাছ কাটার ঘটনাও আমরা ভুলিনি। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল নির্মাণের কিছুদিন পরই বলা হলো এটি পরিকল্পিত হয়নি—তাই ভাঙতে হবে। ‘নতুন রেজিস্ট্রার ভবন’ ভেঙে ফেলার কথাও তখন শোনা গিয়েছিল। এসব রাষ্ট্রীয় অর্থের চরম অপচয়।”
মাজহারুল ইসলাম তার পোস্টে বলেন, “আমাদের দাবি স্পষ্ট—একটি পূর্ণাঙ্গ, বিজ্ঞানভিত্তিক মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করতে হবে। যেখানে একাডেমিক, আবাসিক, চিত্তাকর্ষক ও রিজার্ভ এলাকা সুনির্দিষ্ট থাকবে। প্রয়োজনের ভিত্তিতে তবেই নির্মাণকাজ পরিচালিত হবে। শুধু বরাদ্দ এলে গাছ কেটে জায়গা দখল করে ফেলা চলবে না।”
পোস্টের শেষাংশে তিনি আহ্বান জানান, “অবিলম্বে নিয়মবহির্ভূত গাছ কাটার আয়োজন বন্ধ করতে হবে। দ্রুত মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করে তার আলোকে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।”