দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি)। আগামী বুধবার আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে নোবেল বিজয়ী ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাবেক প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ডি-লিট ডিগ্রি প্রদান করা হবে।
বিশ্বজুড়ে দারিদ্র্য বিমোচন ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এই উপাধিতে তাঁকে ভূষিত করা হবে। সমাবর্তন বক্তা হিসেবেও বক্তব্য দেবেন ড. ইউনূস।
সমাবর্তনে প্রায় ২৩ হাজার শিক্ষার্থী আনুষ্ঠানিকভাবে সনদ গ্রহণ করবেন। শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অতিথি মিলিয়ে প্রায় ২৫ হাজার মানুষের উপস্থিতি প্রত্যাশিত হলেও পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে এক লাখের বেশি মানুষের সমাগম হতে পারে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার, সমাবর্তন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. এনায়েত উল্যা পাটোয়ারীসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সমাবর্তীরাও সকাল ১০টা থেকে ১২টার মধ্যে নিজ নিজ বিভাগ বা ইনস্টিটিউট থেকে খাবার ও গিফট সংগ্রহ করতে পারবেন। গিফট প্যাকেজে থাকবে ব্যাগ, স্মরণিকা, কলম, পিন, ওয়ালেট এবং কনভোকেশন টুপি।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় যাতায়াতে বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। শাটল ট্রেনের পাশাপাশি ১০০টি বাস সকাল ৬টা থেকে চলাচল শুরু করবে। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব যানবাহন ছাড়া অন্য কোনো পরিবহন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে না। তবে ১ নম্বর গেট থেকে অভ্যন্তরে শাটল বাস চলবে।
এবারের ৫ম সমাবর্তনে ৪২ জন পিএইচডি ও ৩৩ জন এম.ফিল সহ মোট ২২,৫৮৬ জন শিক্ষার্থী স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। এর মধ্যে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ থেকে ৪৯৮৮ জন, বিজ্ঞান অনুষদ থেকে ২৭৬৬ জন, ব্যবসায় প্রশাসন ৪৫৯৩ জন, সমাজ বিজ্ঞান ৪১৫৮ জন, জীববিদ্যা ১৬৮৫ জন, ইঞ্জিনিয়ারিং ৭৯৬ জন, আইন ৭০৩ জন, শিক্ষা ৩১৭ জন, মেরিন সায়েন্স ২৮৪ জন এবং চিকিৎসা অনুষদ থেকে ২২৯৬ জন শিক্ষার্থী ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
সমাবর্তনের জন্য প্রাক্কলিত বাজেট ধরা হয়েছে প্রায় ১৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আবেদন ফি বাবদ সাড়ে ৬ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ব্যয় হচ্ছে প্যান্ডেল, সাজসজ্জা ও আসন ব্যবস্থাপনায়।
প্রসঙ্গত, ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে দেশের অন্যতম বৃহৎ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখানে ১০টি অনুষদের অধীনে ৪৮টি বিভাগ, ৬টি ইনস্টিটিউট ও ৫টি গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে। বর্তমানে প্রায় ২৮,৫১৫ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন এবং শিক্ষক সংখ্যা ৯৯৬ জন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য ১৪টি আবাসিক হল রয়েছে, যার মধ্যে ৯টি ছাত্র এবং ৫টি ছাত্রীদের জন্য। রয়েছে একটি হোস্টেলও। এখানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রির পাশাপাশি এম.ফিল, পিএইচডি, এমডি ও এমএস (মেডিক্যাল সায়েন্স) ডিগ্রিও প্রদান করা হয়।