স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুরঃ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব কমন্সে উচ্চশিক্ষা উন্নয়ন, কারিকুলাম আধুনিকায়ন ও প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষতা উন্নয়ন নিয়ে গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রতি যে সংস্কারমূলক উদ্যোগ নিয়েছে—বিশেষত সিলেবাস হালনাগাদ, কারিগরি শিক্ষা, ডেটা সায়েন্স, মেশিন লার্নিং, এআই প্রযুক্তি ও ডিজিটাল দক্ষতা বাড়ানোর পদক্ষেপ—তা ব্রিটিশ এমপি ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীদের পক্ষ থেকে প্রশংসিত হয়েছে।

এর আগে ২৬ নভেম্বর ২০২৫ যুক্তরাজ্যের স্যালফোর্ড ইউনিভার্সিটির সঙ্গে ডেটা সায়েন্স, মেশিন লার্নিং, পাবলিক হেলথ ও এআই-ভিত্তিক গবেষণা ও শিক্ষা সহযোগিতার বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করে। ওই ধারাবাহিকতায় হাউস অব কমন্সে গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করেন গ্রেটার ম্যানচেস্টারের মেয়র এন্ডি বার্নহাম, ওল্ডহ্যামের এমপি জিম ম্যাকমেহোন এবং কাউন্সিলর আবদুল জব্বার।

মূল বক্তা হিসেবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ বলেন, উচ্চ শিক্ষায় বাংলাদেশের ৭০% শিক্ষার্থীকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা দেয়। এই বিপুল শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ বদলাতে কারিগরি জ্ঞান, এআই দক্ষতা এবং ডিজিটাল শিক্ষা এখন অপরিহার্য।

তিনি জানান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে দেশ-বিদেশের খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একের পর এক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে, যাতে শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মানের প্রযুক্তিগত জ্ঞান অর্জনের সুযোগ পায়।

ব্রিটিশ এমপি জিম ম্যাকমেহোন উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন,

বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব ছাড়া আধুনিক শিক্ষা উন্নত করা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় যেভাবে দ্রুত সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। আমরা প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।

গ্রেটার ম্যানচেস্টার বাংলাদেশ পার্টনারশিপের চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন নির্ভর করছে আধুনিক প্রযুক্তি শিক্ষা ও দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির ওপর। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এই উদ্যোগ একটি নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।

স্যালফোর্ড ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে অধ্যাপক নিক বিচ এবং ডেটা সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো সারে জানান,এআই ও ডেটা সায়েন্স শিক্ষা বিকাশে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে আমরা প্রস্তুত।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হাইকমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি নূরানী রোপমা, ব্রিটিশ কাউন্সিলের সাউথ এশিয়া ডিরেক্টর ডেভিড নকস, স্যালফোর্ড ইউনিভার্সিটির ডিন ও ডেপুটি ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ভিকি, যুক্তরাজ্যের কারিগরি শিক্ষা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক পলসহ ব্রিটিশ সরকারের বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। বক্তারা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কারমূলক পদক্ষেপে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে ভবিষ্যত সহযোগিতার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সভাপতিত্ব করেন ব্রিটিশ এমপি জিম ম্যাকমেহোন।