বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনকে অব্যাহতি দিয়েছে সরকার। মঙ্গলবার ( ১২ মে) রাতে রাষ্ট্রপতির আদেশে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
একই সঙ্গে উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মামুন অর রশিদকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলমকে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার।
মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এএসএম কাসেম স্বাক্ষরিত পৃথক প্রজ্ঞাপনে এসব তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ববিতে পূর্ণাঙ্গ উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য ড. তৌফিক এই পদে দায়িত্ব পালন করবেন।
প্রজ্ঞাপনে ড. শুচিতা শরমিনকে তার আগের কর্মস্থল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে যোগদানের অনুমতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া উপউপাচার্যকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং কোষাধ্যক্ষকে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের আগের কর্মস্থলে যোগদান করতে বলা হয়েছে।
এদিকে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশনে থাকা শিক্ষার্থীরা তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন। একই সঙ্গে তারা উল্লাসে মেতেছেন। তিন শীর্ষ পদধারীকে অপসারণের খবরে রাতেই ক্যাম্পাসে আনন্দ মিছিল বের করেন তারা।
ড. শুচিতার বিরুদ্ধে টানা আন্দোলনের অংশ হিসেবে অনশনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে রবিউল ইসলাম গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে আরো তিনজন অসুস্থ হন। তাদের একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়।
উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। তাদের স্পষ্ট বক্তব্য ছিলÑ প্রয়োজনে জীবন দেবেন, তবুও বিতর্কিত এসব কর্মকর্তাকে ববিতে থাকতে দেবেন না।
অনশনরত শিক্ষার্থী ওয়াহিদুর রহমান বলেছিলেন, ড. শুচিতা পদত্যাগ না করলে এখান থেকে যাবে আমার কফিন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফিজ আশরাফুল হক শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে যৌক্তিক আখ্যা দিয়ে বলেছিলেন, ২৮ দিন ধরে শিক্ষার্থীরা এক স্বৈরাচার উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে আন্দোলন করছিল। ড. শুচিতাকে অব্যাহতি দিতে কেন দেরি করা হলো, তা বোধগম্য নয়।
মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় পূর্বঘোষিত আলটিমেটাম শেষ হলেও ড. শুচিতা পদত্যাগ না করায় দক্ষিণবঙ্গ ব্লকেড কর্মসূচির আওতায় শিক্ষার্থীরা ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে সেখানে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। এতে মহাসড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়।
চলমান আন্দোলনের মধ্যেই বিভাগের চেয়ারম্যান, সহকারী প্রক্টর, শেরেবাংলা হলের আবাসিক শিক্ষক, আইকিউএসির ভারপ্রাপ্ত পরিচালক, গেস্ট হাউসের পরিচালকসহ মোট ৯ শিক্ষক বিভিন্ন প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন।