ডাকসুর মতো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনেও নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা। জিএস ও এজিএসের মতো শীর্ষ দুই পদসহ মোট ২৫টি পদের ২০টিতেই জয় পেয়েছে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল সমন্বিত শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থীরা।
সহ-সভাপতিসহ (ভিপি) বাকি পাঁচটি পদের তিনটিতে স্বতন্ত্র এবং দুটি পদে জয় পেয়েছেন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) প্যানেলের প্রার্থীরা।
প্রকাশিত ফলে ২০টি পদে জয়ী হয়েছেন শিবির-সমর্থিত প্রার্থীরা। এর মধ্যে সাধারণ সম্পাদক (জিএস), সহ-সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ ও নারী), শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক, পরিবেশসহ কার্যকরী সদস্যসহ বেশিরভাগ পদই গেছে শিবির-সমর্থিত প্যানেলের ঝুলিতে।
ভিপি পদে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী প্যানেলের আব্দুর রশিদ জিতু। এছাড়া সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র মহিবুল্লাহ শেখ জিসান। সমাজসেবা সম্পাদক পদে জয়ী হয়েছেন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস)-সমর্থিত আহসাব লাবিব।
কে কোন পদে জয় পেয়েছেন
ভিপি: আব্দুর রশিদ জিতু (স্বতন্ত্র)। তিনি ৩৩৩৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।
জিএস: মো. মাজহারুল ইসলাম (শিবির প্যানেল)। তিনি পেয়েছেন ৩৯৩০ ভোট।
এজিএস (পুরুষ): ২৩৫৮ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন ফেরদৌস আল হাসান (শিবির প্যানেল)।
এজিএস (নারী): আয়েশা সিদ্দীকা মেঘলা ৩৪০২ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন (শিবির প্যানেল)।
শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক: আবু ওবায়দা ওসামা (শিবির প্যানেল)। তিনি পেয়েছেন ২৪২৮ ভোট।
পরিবেশ ও প্রকৃতি সংরেক্ষণ সম্পাদক: মো. শাফায়েত মীর (শিবির প্যানেল)। তার প্রাপ্ত ভোট ২১১১।
সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক- মো. জাহিদুল ইসলাম (শিবির প্যানেল)। তিনি পেয়েছেন ১৯০৭।
সাংস্কৃতিক সম্পাদক: মহিবুল্লাহ শেখ জিসান (স্বতন্ত্র)। তার প্রাপ্ত ভোট ২০১৮।
সহ সাংস্কৃতিক সম্পাদক: মো. রায়হান উদ্দীন (শিবির প্যানেল)। তিনি পেয়েছেন ১৯৮৬ ভোট।
নাট্য সম্পাদক: মো. রুহুল ইসলাম (শিবির প্যানেল)। তিনি পেয়েছেন ১৯২৯ ভোট।
ক্রীড়া সম্পাদক: মাহমুদুল হাসান কিরন (স্বতন্ত্র)। তিনি ৫৭৭৮ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।
সহ-ক্রীড়া সম্পাদক (নারী): ফারহানা আক্তার লুবনা (শিবির প্যানেল)। তার প্রাপ্ত ভোট ১৯৭৬।
সহ-ক্রীড়া সম্পাদক (পুরুষ): মো. মাহাদী হাসান (শিবির প্যানেল)। তিনি ২১০৫ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।
তথ্য প্রযুক্তি ও গ্রন্থাগার সম্পাদক: মো. রাশেদুল ইসলাম লিখন (শিবির প্যানেল)। তার প্রাপ্ত ভোট ২৪৩৬।
সমাজসেবা সম্পাদক: আহসাব লাবিব (বাগছাস)। তিনি ১৬৯০ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছেন।
সহ-সমাজসেবা ও মানবসম্পদন উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক (নারী) পদে নিগার সুলতানা (শিবির প্যানেল) জয়ী হয়েছেন।
সহ-সমাজসেবা ও মানবসম্পদন উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক (পুরুষ): মো. তৌহিদ হাসান (শিবির প্যানেল)। তিনি ভোট পেয়েছেন ২৪৪২।
স্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক সম্পাদক: হুসনী মোবারক (শিবির প্যানেল)। তিনি ভোট পেয়েছেন ২৬৫৩।
পরিবহন ও যোগাযোগ সম্পাদক: মো. তানভীর রহমান (শিবির প্যানেল)। তিনি ২৫৫৯ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।
কার্যকরী সদস্য (পুরুষ): বাগছাসের মো. আলী চিশতি ২৪১৪ ভোট এবং শিবির প্যানেলের মো. আবু তালহা ১৮৫৪ ভোট ও তরিকুল ইসলাম ১৭৪৬ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছেন।
কার্যকরী সদস্য (নারী): নুসরাত জাহান ইমা ৩০১৪, নাবিলা বিনতে হারুন ২৭৫০ এবং ফাবলিহা জাহান নাজিয়া ২৪৭৫ ভোট পেয়ে জয় পেয়েছেন। তিনজনই শিবির প্যানেল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
এবারের জাকসু নির্বাচনে ১১ হাজার ৭৫৯ জন ভোটারের মধ্যে প্রায় ৬৮ শতাংশ শিক্ষার্থী ভোট দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় সংসদের ২৫টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ১৭৭ জন প্রার্থী। এর মধ্যে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৯ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৮ জন এবং যুগ্ম সম্পাদক (এজিএস) পদে ১৬ জন প্রার্থী রয়েছেন। নারী প্রার্থীর সংখ্যা ৬। নির্বাচনে অংশ নিয়েছে ছাত্রশিবির, ছাত্রদল, বাগছাস ও স্বতন্ত্রসহ মোট আটটি পূর্ণ ও আংশিক প্যানেল।