ইবরাহীম খলিল : গতকাল অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে ইসলামী ছাত্র শিবির এগিয়েছিল। রাত তিনটায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত যে ফলাফল ঘোষাণ করা হয় তাতে শিবির সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী সাদিক কায়েম বিপুল ভোটে এগিয়ে ছিলেন। একই প্যানেলের জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদও বড়ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন। তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল ছাত্রদল ঘোষিত প্যানেল। বহুল প্রতীক্ষিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে। ডাকসু নির্বাচনের ফল জানার অপেক্ষায় পুরো জাতি। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টায় শুরু হয় ভোটগ্রহণ এবং শেষ হয় বিকেল ৪টায়। অবশ্য একটি কেন্দ্রে কিছুটা সময় বেশি লেগেছে। টানা ৮ ঘণ্টা আটটি ভোট কেন্দ্রে চলে ভোটগ্রহণ। এবার ভোটগ্রহণের সময় কোনও ধরনের সংঘাত বা বড় ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার খবর পাওয়া যায় নি। তবে ছিল অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ।
ভোট গ্রহণ শেষে গণনা করা হচ্ছে অপটিক্যাল মার্ক রিকগনিশন (ওএমআর) মেশিনে। প্রতিটি কেন্দ্রের বাইরে এলইডি স্ক্রিনে ফল গণনা প্রদর্শিত হচ্ছে। সবশেষে সিনেট ভবন মিলনায়তনে সব কেন্দ্রের মোট ফল ঘোষিত হবে বলে জানা গেছে। ডাকসু নির্বাচনের ফল জানার জন্য অপেক্ষায় পুরো জাতি। ভোট গ্রহণ শেষে কিছুটা উত্তেজনা দেখা দেয়। ছাত্রদল মনোনিত প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান টিএসসিতে অবস্থিত ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করতে চাইলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
ছাত্রশিবির সমর্থিত ভিপি প্রার্থী সাদেক কায়েম বলেছেন, (ডাকসু) নির্বাচনে শিক্ষার্থীরা ভোট দিয়েছেন। এ ভোটে ফলাফল যাই হোক, তা মেনে নিতে সব প্রার্থী ও ছাত্রসংগঠনের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনে হার-জিতের কিছু নেই। আমরা সবাই জুলাইয়ের সহযোদ্ধা ছিলাম। ঐক্যবদ্ধভাবে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে বিদায় করেছি। জুলাই বিপ্লবের আকাক্সক্ষা বাস্তবায়ন করতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা আমাদের যাকেই বেছে নেবে, তাকেই মেনে নেবো। কিন্তু শিক্ষার্থীদের ওপর যদি কেউ জোরপূর্বক কিছু চাপিয়ে দিতে চায়, তাহলে হিতে বিপরীত হবে।
এদিন বেলা তিনটার দিকে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ জানান, বিভিন্ন কেন্দ্রে ৭০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। তিনি কোন দলের লোক নন। তিনি সবাইকে নিয়েই কাজ করতে চান।
ডাকসুতে এবার মোট ভোটার ৩৯ হাজার ৮৭৪। ২৮টি পদের বিপরীতে ৪৭১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এছাড়া, প্রতি হল সংসদে ১৩টি করে পদ, ১৮টি হলে মোট পদের সংখ্যা ২৩৪টি। এসব পদে ভোটে লড়ছেন ১ হাজার ৩৫ জন। মোট ৮ টি ভোট কেন্দ্রের ৮১০টি বুথে উৎসবের আমেজে ভোট গ্রহণ চলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। এদিকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে একজন পোলিং অফিসারকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়। বাকী অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে নাকচ করে দেয় রিটার্নিং অফিস। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ভোট গণনা চলছিল। ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের এখন পর্যন্ত ৮০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা।
প্রথমবারের মতো ভোটগ্রহণ আবাসিক হলের বাইরে একাডেমিক ভবনে আয়োজন করা হয়। নিবন্ধিত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস জুড়ে নির্ধারিত আটটি কেন্দ্রে স্থাপিত ৮১০টি বুথে ভোট দেন। শিক্ষার্থীরা কার্জন হল, টিএসসি, ঢাকা ইউনিভার্সিটি ক্লাব, সিনেট ভবন, উদয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভূতত্ত্ব বিভাগ, শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র ও বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভোট প্রদান করেন।
জহুরুল হক হলে ভোটার ১৯৬৩ জন, কাস্টিং ভোট ১৬৫৮টি (৮৩.৪৩ শতাংশ)। এস এম হলে ভোটার ৬৬৫ জন, কাস্টিং ৫৫২টি (৮২.৯৩ শতাংশ)। জগন্নাথ হলে ভোটার ২২২২ জন, কাস্টিং হয়েছে ১৮৩১টি (৮২.৪৫ শতাংশ)। রোকেয়া হলে মোট ভোটার ৫৬৭৬ জন, কাস্টিং ভোট ৩৯০৭টি (৬৯ শতাংশ), ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৬৩ দশমিক ২৫ শতাংশ।
এদিকে ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য। ভোট গণনার সরাসরি সম্প্রচার কেন্দ্রে বাইরে স্থাপিত এলইডি স্ক্রিনে প্রদর্শনের উদ্যোগ নেয়া হয়। পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক সংবাদকর্মী ডাকসু নির্বাচন কাভার করতে আসেন।
সকাল পৌনে ৯টার দিকে উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভোটে দিতে আসেন ভিপি প্রার্থী সাদিক কায়েম। তিনি বলেন, একটি দল সমর্থিত প্রার্থীদের লোকজন বিধিবহির্ভূত আচরণ করছে। তারা ভোট কেন্দ্রের একশ’ গজের মধ্যে ডেস্ক স্থাপন করেছে। লাইনে দাঁড়ানো ভোটারদের কাছে ভোট চাচ্ছে। প্রশাসন সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তিনি সকালে সবাইকে এসে ভোট প্রদানের আহ্বান জানান। একই কেন্দ্রে সকাল পৌনে দশটার দিকে একই কেন্দ্রে আসেন জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদ। তিনিও প্রায় একই ধরনের অভিযোগ করেন।
সকালের দিকে আবাসিক শিক্ষার্থীরা ভোট দিতে আসেন। আর অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা আসেন দুপুরের দিকে। বিশ^বিদ্যালয়ের পরিবহন ভর্তি করে এসে ভোট প্রয়োগ করেন। সব মিলিয়ে সারাদিন উৎসবমুখর করে রাখেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় এলাকা।
ব্রেইলের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে (ডাকসু) ভোট দিয়েছেন ফারুক হাওলাদার। ভোট দেওয়ার পর সাংবাদিকদের তিনি জানান, জাতীয় নির্বাচনেও ব্রেইল পদ্ধতি চালু করা হোক। ফারুক হাওলাদার বলেন, 'ব্রেইলের ব্যবস্থা রাখায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ। আমি ব্রেইল ব্যবহার করে স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পেরেছি।' তার ভাষ্য, 'আমার জন্য দারুণ একটি অভিজ্ঞতা হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনেও ব্রেইল পদ্ধতি চালু করা হবে বলে আমার প্রত্যাশা। এবারই প্রথমবারের মতো ডাকসু নির্বাচনে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্যে ব্রেইল পদ্ধতিতে ভোটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বেলা পৌনে দুইটার দিকে ব্রিফ করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক জসিম উদ্দিন। তিনি অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, আমরা দুটি জায়গা থেকে অভিযোগ পেয়েছি। একটি অভিযোগের ব্যাপারে তাৎক্ষণিক সমাধান দেওয়া হয়েছে। একটি কেন্দ্র থেকে পোলিং অফিসার প্রত্যাহার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে বিকাল তিনটার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে আসেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. এস এম নিয়াজ আহমেদ। তিনি উপস্থিত থেকে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে ভোট গণনার মেশিন ভোট কেন্দ্রে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। ঢাবি ভিসির পেছনে পেছনে সেখানে আসে ছাত্রদল সমর্থিত ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম। তিনি অভিযোগ দিয়ে দ্রুত বের হয়ে যান।
বিকেল ৪টায় ভোটগ্রহণের সময় শেষ হওয়ার পর মধুর ক্যান্টিনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে আবিদুল ইসলাম বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ফল ম্যানিপুলেশনের চেষ্টা করলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ করবে। নির্বাচন চলাকালে বিভিন্ন অভিযোগের কথা তুলে আবিদ বলেন, 'আমরা ভেবেছিলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাটি থেকে গোটা বাংলাদেশে সুন্দর রাজনৈতিক সংস্কৃতি উপহার দেবো। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এক্ষেত্রে চরম ব্যর্থতার প্রমাণ দিয়েছে।
আমরা যখনই কোনো কেন্দ্রে গিয়েছি, আমাদের বারবার এতিমের মতো দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। আমাদের সময় নষ্ট করানো হয়েছে। আবিদুল অভিযোগ করে বলেন, ‘রোকেয়া হলের এক মেয়ে হলের ভোট কেন্দ্র থেকে বের হয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ করেন, ভাই আমাদের যে ব্যালট পেপার দেওয়া হয়েছে তাতে আগে থেকে সাদিক কায়েম ও এস এম ফরহাদের নামে ক্রস চিহ্ন দেওয়া ছিল। এটা শুধু রোকেয়া হলের ক্ষেত্রে হয়নি। এমন ঘটনা অমর একুশে হলের ভোট কেন্দ্রেও হয়েছে।
এদিকে দুপুর দেড়টার দিকে লিফলেট বিতরণকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীনের সঙ্গে প্রশাসনের বাগবিত-ার জেরে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ সময় প্রশাসনের বিরুদ্ধে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দেন ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। ছাত্রদলের অভিযোগ, প্রশাসন শিবিরের পক্ষে কাজ করছে।
উত্তেজনা নিরসনে এ সময় সামনে বের হয়ে আসেন দায়িত্বরত শিক্ষক সামিরা লুৎফা নিত্রা। তিনি ছাত্রদল নেতাকর্মীদের শান্ত করেন। তিনি বলেন, ‘এ কেন্দ্রে কোনও অনিয়ম হয়নি। তবে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।’ স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী আল সাদী ভূঁইয়া বলেন, ‘ছাত্রদল ও শিবিরের নেতারা আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে। অথচ স্বতন্ত্র প্যানেলের কর্মীদের নানা হয়রানি করা হচ্ছে।
ভিসির সাথে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর ডাকসু নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানের সঙ্গে সাক্ষাত করে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করেছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। সিনেট ভবনে তাদের অভিযোগ ভিসির কাছে তুলে ধরেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতারা। এ সময় ছাত্রদল নেতাকর্মীদের ভিসির সঙ্গে উচ্চবাচ্য ও টেবিল চাপড়ে কথা বলতে দেখা যায়। ভিসির কাছে নির্বাচন কেন্দ্রীক বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন তারা। অভিযোগগুলো ছিল, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জামায়াত-শিবির দ্বারা প্রভাবিত। ভোটগ্রহণ চলার সময় থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের বাইরে চারপাশে জামায়াত-শিবিরের লোকজনের জড়ো হওয়ার খবর ভিসি জানেন কিনা, এমন অভিযোগও ছিল তাদের।
শিবির সমর্থিত প্যানেলের সংবাদ সম্মেলন
ছাত্র শিবিরের ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদ বলেছেন, ছাত্রদল নাটক মঞ্চস্থ করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। তারা আমাদের বিরুদ্ধে ভোট কারচুপির অভিযোগ করেছে কিন্তু তার কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি। আমরা এটাই বলবো যে, তারা নাটক মঞ্চস্থ করতে পারেনি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এস এম ফরহাদ বলেন, যে কেন্দ্রেই অভিযোগ উঠছে সেখানকার সিসিটিভি ক্যামেরা চেক করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা এই দাবি জানাচ্ছি।
এস এম ফরহাদ বলেন, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ শিক্ষকদের সঙ্গে যে ধরনের আচরণ করতো আজকে ছাত্রদলের ভাইয়েরা সেই ধরণের আচরণ করেছেন। এটা খুবই দুঃখজনক। শিক্ষকদের সঙ্গে সব সময়ই আমাদের ভালো ব্যবহার করতে হবে।
ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা অভিযোগ করেন, কেন্দ্রের বাইরে কাকে ভোট দিতে হবে তাদের নাম লিখে একটা তালিকা ভোটারদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। এই তালিকাটা শিবিরের প্রার্থীর। শুধু তাই নয়, শিবিরের স্বতন্ত্র নামে প্রার্থী তালিকাও তুলে দেওয়া হচ্ছে। এক ফেসবুক পোস্টে তিনি দুটো তালিকার ছবি তুলে ধরেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ৭০ শতাংশের বেশি ভোট পড়ে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান। বিকাল সোয়া তিনটার দিকে সিনেট ভবনের তিনটি কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ভিসি। নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘বিভিন্ন কেন্দ্রে ৭০ শতাংশের বেশি ভোট সংগ্রহ হয়েছে। চারটার পরও যেসব শিক্ষার্থী লাইনে থাকবেন, তাদের ভোট নেওয়া হবে। ডাকসু নির্বাচনে স্বচ্ছতার ঘাটতি নেই বলেও দাবি করেন তিনি।
ভিসি বলেন, ‘কার্জন হলে ভুলক্রমে একটি ছোট সমস্যা হয়েছে। তার জন্য আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছি। তবু এই ঘটনার আমরা পুনরায় তদন্ত করে কেউ জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেবো। ডাকসু নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে আবারও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, এতে হেনস্তার শিকার হয়েছেন সহকারী প্রক্টর নূরে আলম সিদ্দিকী। অন্যদিকে অভিযোগের পাল্টা অভিযোগ করেছেন ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম ও শিবিরের প্যানেল ঐক্যবদ্ধ বদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের ভিপি প্রার্থী আবু সাদিক কায়েম।
সংবাদ কর্মীর মৃত্যু
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের দায়িত্ব পালানকালে তরিকুল ইসলাম নামের এক সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের ভেতরে ডাকসু নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন তরিকুল। বেলা দেড়টার দিকে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। অচেতন অবস্থায় তরিকুলকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত (ডাকসু) নির্বাচনে স্বচ্ছতা নিশ্চিতে ভোট গণনার দৃশ্য কেন্দ্রগুলোর সামনে এলইডি স্ক্রিনে দেখানো হচ্ছে। গণনা শেষ হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। সবার দৃষ্টি ছিল এলইডি স্ক্রিনে।