নিরাপদ ক্যাম্পাস গড়ার আশ্বাস দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রার্থীরা। তাদের বলছেন নিরাপদ আবাসনের কথা আবার কেউ আশ্বস্ত করছেন কর্মমূখী শিক্ষার কথা। ভিন্ন কথাও বলছেন কেউ কেউ।
গতকাল শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের ভিপি প্রার্থী আবু সাদিক কায়েম বলেন, একটা শিক্ষার্থী যে ধরনের স্বপ্ন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিরাপদ ক্যাম্পাস গড়ার আগ পর্যন্ত আমরা থামবো না। শুক্রবার জুমার নামাজের পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্যসেন হলে প্রচারণাকালে এসব কথা বলেন তিনি।
সাদিক কায়েম বলেন, শিক্ষার্থীদের আকাঙ্খাই আমাদের আকাঙ্খা। আমরা নির্বাচিত হলে আবাসন সংকট সমাধানে গুরুত্বারোপ করবো। এ লক্ষ্যে প্রাথমিক সমাধান হিসেবে শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতা দেওয়া হবে। পরবর্তীতে, নতুন হল নির্মাণের মাধ্যমে এর স্থায়ী সমাধান করতে হবে।
এছাড়াও, তিনি ক্যান্টিনে খাবারের মান বৃদ্ধি, পুষ্টিবিদের মাধ্যমে মেনু নির্ধারণ ও খাবারের দাম নির্ধারণ, স্বাস্থ্য ও মেডিকেল সেন্টার আধুনিকায়ন, প্রতিটি হলে মেডিকেল সেন্টার স্থাপনের কথা জানান। এ সময় তিনি ভোটকেন্দ্রের অপ্রতুলতা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন। এছাড়াও, শিক্ষার্থীরা যেন নির্দ্বিধায় ভোটকেন্দ্রে আসতে পারে, সে পরিবেশ নিশ্চিত করতে তিনি নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান।
এদিকে ছাত্রদল সমর্থিত ‘আবিদ-হামিম-মায়েদ’ প্যানেল অন্য কোনো প্যানেলের সঙ্গে জোটে যাচ্ছে না বলে জানিয়ে দেন প্যানেলের সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী আবিদুল ইসলাম। শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মুহসীন হলে জুমার নামাজের পর প্রচারণাকালে এ তথ্য জানান তিনি।
শিবিরকে ঠেকাতে ছাত্রদল, স্বতন্ত্র ও বাম সংগঠনগুলোর জোট হতে পারে বলে ফেসবুকে গুঞ্জন চলছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবিদুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আমি আসলে কিছুই জানি না। জানার সুযোগও নেই। প্রচারণা করতে গিয়ে এসব জানার সুযোগ হচ্ছে না। তবে এমন কোনো গুঞ্জন শুনে থাকলে তা ভিত্তিহীন। আমাদের প্যানেল কারও সঙ্গে জোট করবে না।
অন্যদিকে (ডাকসু) নির্বাচনের ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেলের সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী উমামা ফাতেমা বলেন,নির্বাচিত বড় দল দখলদারিত্বই প্রতিষ্ঠিত করবে। শুক্রবার ক্যাম্পাসে গণসংযোগ কর্মসূচি চলাকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। উমামা বলেন, কোনো বড় দল নির্বাচিত হলে তারা ওয়েলফেয়ার পলিটিক্স করবে। ফিল্টার, ভেন্ডিং মেশিন ও কল স্থাপন করেই তাদের কাজ শেষ হয়ে যাবে। এই ধরনের উন্নয়ন শেখ হাসিনা গত ১৭ বছর ধরে করে গেছে।
কিন্তু সমস্যা হলো, এটি কোনো সিস্টেমকে উন্নত হতে দেয় না। ওয়েলফেয়ার পলিটিক্স সিস্টেমকে প্রশ্ন করে না বরং বিকল্প একটি সিস্টেম তৈরি করে, যা ছাত্র রাজনীতিতে দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র উমামা আরও বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী যারা আছে, তাদের পকেটে হয়তো টাকা নেই। কিন্তু মনের জোর আছে। আমরা মনে করি, প্রশাসনকে বাধ্য করতে পারব। তিনি হল পর্যায়ে গুপ্ত রাজনীতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, “হলগুলোতে গুপ্ত রাজনীতি এখনও চলছে। ছাত্রদল কমিটি দিয়ে হলে প্রচারণা চালাচ্ছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দেওয়া বিধি-নিষেধের কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্রচারণায় বাধার সম্মুখীন হচ্ছে।