দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সৌর বিদ্যুৎ প্যানেল বসাতে সমঝোতা স্মারক সই করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. ফাওজুল কবির খান। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে বিদ্যুৎ ভবনে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিবরা সমঝোতা স্মারকে সই করেন। তারা মূলত তাদের অধীনে থাকা প্রতিষ্ঠানের ছাদ হস্তান্তর প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করবেন। ওইসব সৌর বিদ্যুতের প্যানেল থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ প্রথমে তারা ব্যবহার করতে পারবেন। উদ্বৃত্ত অংশ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করবেন।

উপদেষ্টা ড. ফাওজুল কবির খান বলেন, ফেব্রুয়ারির মধ্যে বিদ্যুৎ গ্রিডে আনতে হবে। যেসব বিতরণ কোম্পানি ফেল করবে তাদের বিরুদ্ধে সিরিয়াস ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটা দিয়ে কর্মকর্তার পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করা হবে। কোনও কর্মকর্তা অসহযোগিতা করলে জানাবেন, আমরা ব্যবস্থা নেবো। অনুষ্ঠানে বলা হয়, জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচির উদ্যোগ ‘খ’ (শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্য স্থাপনা: স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও হাসপাতালে ওপেক্স মডেলে বিনিয়োগ, যেখানে প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনও ব্যয় বহন করতে হবে না। ফলশ্রুতিতে, প্রতিষ্ঠানগুলোর বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় হবে) বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ওই চুক্তি করা হয়। ‘ক’ এবং ‘খ’ শ্রেণির আওতায় দুই থেকে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ফারজানা মমতাজ বলেন, সারা দেশে খ শ্রেণির তালিকাভুক্ত ৪৬ হাজার ৮৫৪টি প্রতিষ্ঠানের ছাদে ৩০৮ বর্গফুট জায়গা রয়েছে। এসব ছাদে ১ হাজার ৪৫১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। ইতোমধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে, ডিসেম্বরের আগেই প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু হবে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বলেন, বিতরণ কোম্পানির মাধ্যমে স্থান নিশ্চিত করে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।

পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের এক কর্মকর্তা জানান, তাদের আওতাভুক্ত এলাকার প্রতিষ্ঠানগুলোর ছাদে ১ হাজার ৬৪ মেগাওয়াট উৎপাদন করা সম্ভব।

উপদেষ্টা উপস্থিত বিতরণ কোম্পানিগুলোর কাছে টেন্ডার প্রক্রিয়ার অবস্থা জানতে চান। বিদ্যুতের একটি বিতরণ কোম্পানি জানায়, তারা ৩৫দিন সময় দিয়ে দরপত্র আহ্বান করতে যাচ্ছে। জবাবে উপদেষ্টা বলেন, পিপিআর বিধি অনুযায়ী ২০ দিনের যে সময়সীমা রয়েছে, তার বেশি সময় দেওয়া যাবে না। ২০ নবেম্বর দরপত্র জমার তারিখ চূড়ান্ত করতে হবে। দরপত্র যাচাই-বাছাই করতে হবে ২৬ নভেম্বরের মধ্যে। ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে দরদাতাদের সঙ্গে চূড়ান্ত চুক্তি করতে হবে। ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে বিদ্যুতের উৎপাদন শুরু করতে হবে।

অর্থায়ন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব বলেন, আমরা দরপত্র আহ্বান করছি, দরদাতারা বিনিয়োগ করবে। যারা কম দরে বিদ্যুৎ দেওয়ার প্রস্তাব করবে তাদের প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে। দরদাতাকে অর্থায়ন করবে বাণিজ্যিক ব্যাংক ও বিভিন্ন অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান। গ্রিন ফাইন্যান্স তহবিলের আওতায় কম সুদে ঋণ পাওয়ার বিষয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকের সঙ্গে আলাপ হয়েছে।