টানা তিন দিন ধরে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখের রাস্তায় অবস্থান কর্মসূচি ও অনশন পালনের পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত চারদফা দাবি মেনে নিয়েছে সরকার। এরপর পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ।

শুক্রবার (১৬ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ইউজিসি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে এ ঘোষণা দেন জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম।

তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা বাজেট বৃদ্ধি করার মাধ্যমে প্রথম দাবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আবাসন সংকট নিরসনে অস্থায়ী হল নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়েছে, যা শিগগিরই শুরু হবে। আর দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুরু হবে, ইতোমধ্যেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

এ সময় ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ বলেন, আমরা সারাদিন এটা নিয়ে আপনাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কাজ করেছি। ইউজিসি একটি পরিবার হিসেবে সবাই মিলে আপনাদের সমস্যা সমাধান করতে পারব। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি একসঙ্গে বসে সব সমাধান করব। আপনাদের সব দাবি বাস্তবায়নে আমরা কাজ করছি।

ইউজিসি চেয়ারম্যান এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি আদায়ের জন্য গণঅনশনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান।

জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন বলেন, আমাদের চতুর্থ দাবি ছিলো আমাদের ওপর হামলায় জড়িতিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। হামলার ঘটনায় পুলিশ দু:খ প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া সাত দিনের মধ্যে হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বলেও জানিয়েছে।

দাবি মেনে নেওয়ায় জবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা

দাবি মেনে নেওয়ায় চলমান আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইস উদ্দিন। শুক্রবার (১৬ মে) রাত রাত সাড়ে ৮টায় কাকরাইল মোড়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ ঘোষণা দেন তিনি।

তিনি বলেন, আমাদের দাবিগুলো যেহেতু মেনে নেওয়া হয়েছে তাই চলমান আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করা হলো। তবে দাবিগুলো বাস্তবায়নে গড়িমসি হলে আবার আমরা এই আন্দোলনের অভিজ্ঞতা থেকে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব।

প্রসঙ্গত, চার দফা দাবিতে তৃতীয়দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

তাদের চার দফা হলো— ১. আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি কার্যকর করতে হবে; ২. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করেই অনুমোদন করতে হবে; ৩. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করতে হবে; ৪. শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণ করা পুলিশের বিচার করা।