রাবি রিপোর্টার: ‘ফিলিস্তিনে জ¦লছে আগুন, জ¦লছে আগুন বক্ষে/ বিশ্ববাসী দাঁড়াও রুখে, মানবতার পক্ষে- এই শ্লোগানকে প্রতিপাদ্য করে ফিলিস্তিনে চলমান বর্বরোচিত গণহত্যার প্রতিবাদে গতকাল রোববার সকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্যারিস রোডে গাজার প্রতি সংহতি জানিয়ে প্রতিবাদী কবিতা পাঠ কর্মসূচি পালন করা হয়।

শব্দকলা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগ এই অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন রাবি ভিসি প্রফেসর ড. সালেহ্ হাসান নকিব। শব্দকলা সম্পাদক এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রফেসর ড. মাহফুজুর রহমান আখন্দ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ প্রতিবাদী আয়োজনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন রাবি প্রফেসর ইমেরিটাস ড. এ কে এম আজহারুল ইসলাম, রাবিে প্রা-ভিসি যথাক্রমে প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন এবং প্রফেসর ড. ফরিদ উদ্দিন খান। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন কথাসাহিত্যিক ও অনুবাদক নাজিব ওয়াদুদ। ভিসি অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, কবিতা হলো হৃদয়ের ভাষা। অল্প কথাতে হৃদয়ের গভীরতম অনুভূতিকে প্রকাশ করতে কবিতার চেয়ে সুন্দর আর কোনো মাধ্যম নেই। কবিতা যেমন কোমলতার কথা বলে তেমনি যুদ্ধ, দ্রোহ, বিদ্রোহের ভাব প্রকাশ করার এক অন্যতম মাধ্যম। অবিচারের বিরুদ্ধে সুবিচারের যে যুদ্ধ চলছে এ যুদ্ধের অনেকগুলো দিক আছে। মাঠে যেমন যুদ্ধ হয়, তেমনি জ্ঞানের রাজ্যে যুদ্ধ হয়; এটি মস্ত বড় যুদ্ধ। এটা মানুষকে উজ্জীবিত করে এবং প্রতিবাদী হতে শেখায়। এ ধরনের সাহিত্য-সাংস্কৃতিক উদ্যোগ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও ছড়িয়ে পড়ুক। রাবি উপউপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন বলেন, কবি কাজী নজরুল ইসলাম যখন ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে তার কবিতার মাধ্যমে সংগ্রাম চালিয়েছিলেন তখন কিন্তু মিডিয়া এত শক্তিশালী ছিল না, তবুও তাকে কবিতা লিখে কারাবরণ করতে হয়েছিল। তার কবিতার শক্তি ব্রিটিশদের গদিকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। সুতরাং কবিতাও একটি প্রতিবাদের শক্তিশালী ভাষা। আমার বিশ্বাস, এই আয়োজন ইসরাইলী দখলদার বাহিনীর গদিকে নাড়িয়ে দেবে। উপউপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, কবিতার ভাষার ভেতর যে বারুদ লুকিয়ে থাকে তা অমানবিকতার বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদী ঝড়। ইসরাইলী গণহত্যার প্রতিবাদে শব্দকলার এমন আয়োজন সত্যি প্রসংশার যোগ্য। সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর ড. মাহফুজুর রহমান আখন্দ বলেন, শব্দকলা সবসময় মানবতার পক্ষে কাজ করে। ভিডিও গেইমস খেলার মতো যেভাবে গাজা ও রাফা শহরকে ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে তারই প্রতিবাদে আজকে আমরা কবিতা পাঠের আয়োজন করেছি। গাজার প্রতি এমন বর্বরোচিত হামলার নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চাই। কবি ও গবেষক ড. ফজলুল হক তুহিনের উপস্থাপনায় প্রতিবাদী কবিতা পাঠ করেন কবি সায়ীদ আবুবকর, এরফান আলী এনাফ, জামাল দীন সুমন, জি এম শফিউর রহমান, মঞ্জিলা শরীফ, সাবের রাহী, এ কে এম দৌলতুজ্জামান, সায়দ ওয়াকিল, সেলিম আল সাঈদ, সজীব মেহদী, সাকিব সরকার, সিফাত ই রাব্বী প্রমুখ। রাজশাহীর বিভিন্ন পর্যায়ের কবি ও সাহিত্যিকরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।