পড়াশোনা শেষ হলেও প্রভোস্টের অদূরদর্শিতা ও খামখেয়ালিভাবে এক শিক্ষার্থীকে হলে আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, বাইরে থাকার সামর্থ্য না থাকা এবং হলে আসন পাওয়ার সব ধরনের মানদণ্ড থাকা সত্ত্বেও অনেক শিক্ষার্থী তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
আবাসন সংকটে জর্জরিত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শেরে-বাংলা হলের দায়িত্বে থাকা প্রভোস্ট এবং হাউজ টিউটরদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে হলটির প্রভোস্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আব্দুল আলিম বাছির।
পড়াশোনা শেষ করার পরেও হলের আসন পাওয়া ওই শিক্ষার্থীর নাম শহিদুল ইসলাম, যিনি বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, অনেক আগে আবেদন করেছি, তখন আমি মাস্টার্স ২য় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ছিলাম। ভাইভার দিন আমার বন্ধুরা জানায় হলের ভাইভা চলছে। আমি ভাবছি এটা মাস্টার্স জোনের সিঙ্গেল সিট। তাই ভাইবা দিয়েছিলাম, এখন আমি বাড়িতে চলে এসেছি। আমি টাকা পরিশোধ করবো না এবং হলেও উঠবো না।
আসন বরাদ্দের এমন ঘটনা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গণমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম ও লিংকার্সে চলছে নানা সমালোচনা। একাধিক শিক্ষার্থী মন্তব্য করেছেন যে, প্রশাসনের এমন অদূরদর্শিতা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, "দুর্নীতি আর স্বজনপ্রীতিতে ছেয়ে গেছে বাংলাদেশ। এখানে যোগ্যতার ভিত্তিতে কিছুই হয় না। যার লবিং নেই তার হলে আসন তো দূরের কথা, সেটা চিন্তাও করা যায় না।" তিনি আরও বলেন, "আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন সীমিত, তার ওপর প্রয়োজন হয় লবিং। আমি বারবার আবেদন করেও অনার্স শেষ বর্ষে এসে সিট পেয়েছিলাম।"
শেরে-বাংলা হলের প্রাধ্যক্ষ আব্দুল আলিম বাছির বলেন, "আগের প্রভোস্ট আবেদন জমা নিয়েছেন, কিন্তু ভাইভা নিতে পারেননি। শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী পুনরায় আবেদন ফরম ছাড়া হয়েছে এবং দুইবারের আবেদনের ভাইভা একসঙ্গে নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর থেকে সঠিক তথ্য দিতে পারেনি। তাই বিষয়টি আমি জানতাম না। তাকে টাকা জমা দেওয়ার রশিদ দেওয়া হবে না এবং সিটটি অন্য একজনকে দেওয়া হবে। অর্থনৈতিক অবস্থা, ফলাফল এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাড়ির দূরত্ব বিবেচনা করে আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।" তিনি আরও বলেন, "হলে যে পরিমাণ সিট ফাঁকা আছে, তার থেকে কয়েক গুণ বেশি আবেদন পড়েছে। তাদের অনেকেরই সিট প্রয়োজন হলেও দিতে পারিনি, তাদের জন্য দুঃখ প্রকাশ ছাড়া আমার কিছুই করার নেই।"