গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ফের বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (৯ মে) রাত ১০টায় বটতলা থেকে মিছিল শুরু হয়। পরে তা নতুন রেজিস্ট্রার ভবন, কলা ও মানবিকী অনুষদের নতুন ভবন এবং সমাজবিজ্ঞান ভবনের সামনের সড়ক হয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক সংলগ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসাইনের সঞ্চালনায় সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আনজুম শাহরিয়ার বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সারাদেশে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, আমরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সেই যৌক্তিক আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি। আমরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই, অনতিবিলম্বে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। অন্যথায় আমরা ফ্যাসিবাদবিরোধী সকল শক্তি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে ছাড়বো।
রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিব হোসাইন বলেন, দুই হাজার ছাত্র-জনতার প্রাণের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি একটি নতুন বাংলাদেশ। সেই নতুন বাংলাদেশের প্রথম দাবিই ছিল আওয়ামী লীগের বিচার। কিন্তু ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে এখনো তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। আমরা সরকারকে স্পষ্টভাবে বলতে চাই—দ্রুত বিচার কার্যক্রম শুরু করে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন।
নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান লিমন বলেন, দেশে যদি আবার আওয়ামী লীগ ফিরে আসে, তাহলে আমাদের দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র আবার হুমকির মুখে পড়বে। আমরা দেখেছি, গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ দেশে কী ধরনের ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করেছে, দেশের জনগণের ওপর কী ধরনের অপশাসন চালিয়েছে। অনেকে এখন আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের স্বপ্ন দেখছেন। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, যদি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের কোনো ধরনের অপচেষ্টা করা হয়, তাহলে আমরা আবার ‘লংমার্চ টু ঢাকা’র মতো কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।
সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জিয়া উদ্দিন আয়ান বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এখনো ঘুম ভাঙেনি। যার কারণে আবারও দেশে ‘জুলুম’ নেমে এসেছে। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আমরা ক্লান্ত হয়ে যাইনি। যে আওয়ামী লীগ ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে গণহত্যা চালিয়েছে, যে আওয়ামী লীগ মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল, সেই আওয়ামী লীগকে অনতিবিলম্বে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করে পুনর্বাসনের চেষ্টা করা হলে, যেভাবে হাসিনাকে গদি থেকে নামিয়েছি, তেমনি আপনাদেরও নামাতে আমরা বাধ্য হবো।