DailySangram-Logo-en-H90
ই-পেপার আজকের পত্রিকা

শিক্ষাঙ্গন

কুমারখালীর পান্টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়

নিয়মবহির্ভূত বেতন-ভাতা উত্তোলন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের সনদ না থাকার অভিযোগ

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার পান্টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়ম বহির্ভূত বেতন-ভাতা উত্তোলন ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কামিল পাশের সনদ না থাকার অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুমন মিয়া পলাতক থেকেও নিয়মিত বেতন নিয়েছেন।

উপজেলা সংবাদদাতা
Printed Edition

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার পান্টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়ম বহির্ভূত বেতন-ভাতা উত্তোলন ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কামিল পাশের সনদ না থাকার অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুমন মিয়া পলাতক থেকেও নিয়মিত বেতন নিয়েছেন। তার এই বেতন উত্তোলনে সার্বিক সহায়তা করেছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. রহমত উল্লাহ। যদিও তৎকালীন সভাপতি ইউএনওর নিকট থেকে বেতনভাতা না নিয়ে চাকরি বহাল রেখে ছুটির ব্যব¯থা করেছিলেন শিক্ষক সুন মিয়া।

জানা গেছে, ১৯৫৫ সালে প্রতিষ্ঠিত পান্টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়টির সাবেক প্রধান শিক্ষক শেখ ওবায়দুল হক দিলুর অবসর গ্রহনের পর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন সহকারী শিক্ষক সুমন মিয়া। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক বলেও জানা গেছে। তখন ম্যানেজিং কমিটিতে নতুন সভাপতি হন আরেক আওয়ামীলীগ নেতা রাশেদুজ্জামান তুষার। সভাপতি নির্বাচিত হবার পরপরই তুষার ও সুমনের মাঝে রাজনৈতিক বিরোধ থাকায় তড়িঘড়ি করে বিভিন্ন কারন দেখিয়ে সুমন মিয়াকে সরিয়ে ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের সহকারী শিক্ষক রহমত উল্লাহকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের মদদপুষ্ট সহকারী শিক্ষক রহমত উল্লাহর নেই কামিল পাশের কোন সার্টিফিকেট। তাকে অনিয়মের মাধ্যমেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি কামিলের ভূয়া সনদ দেখিয়ে চাকরি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এই প্রতিবেদককে কামিল পাশের সার্টিফিকেট দেখাতে পারেন নাই রহমত উল্লাহ। তিনি জানান, অনেক বছর আগে আমার মেয়ে আমেরিকা যাওয়ার সময় সনদপত্র কোথায় যে রেখেছে সেটা জানিনা। তবে ফটোকপি দিয়েই সব কাজ সারছি। তিনি এমন গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে বিদ্যালয় পরিচালনা করছেন কীভাবে এমন প্রশ্ন এখন জনমনে। অভিভাবক ও স্থানীয়রা দাবি করছেন, দ্রুত এই শিক্ষককে এমন গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে অপসারণ করা হোক। এছাড়াও জানা গেছে, আওয়ামীলীগ নেতা জাহিদ হোসেন জাফর ও তার অনুসারী রাশেদুজ্জামান তুষারের অনুসারী হওয়াতেই কোন নিয়মনীতি না মেনেই রহমত উল্লাহকে দেওয়া হয় প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ পদেও এই দায়িত্ব।

বিদ্যালয়ের কয়েকজন সহকারী শিক্ষক ও কর্মচারীরা জানিয়েছেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক থাকাকালে সুমন মিয়া বিদ্যালয়ের সংস্কার বাবদ দেড় লক্ষাধীক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তিনি এখনও পলাতক। আওয়ামী সরকারের পতনের পর সুমন মিয়া বিদ্যালয়ে একদিনও হাজির নেই। জানা গেছে, সর্বোচ্চ ৩ মাস মেডিক্যেল ছুটি নেওয়ার বিধান থাকলে সুমন মিয়া অনেক বেশি দিন ছুটি কাটাচ্ছেন নিয়মনীতিকে উপেক্ষা করে। এব্যাপারে সুমনকে সার্বিক সহায়তা করে যাচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রহমত উল্লাহ। তৎকালীন সভাপতি ইউএনওর নিকট থেকে বেতনভাতা না নিয়ে চাকুরী বহাল রেখে ছুটির ব্যব¯থা করে দিয়েছেন এই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রহমত উল্লাহ। হাসিনা সরকার পতনের পরবর্তীতে চরম আওয়ামী পন্থী সনদ বিহীন শিক্ষক রহমত উল্লাহ কিভাবে স্বপদে বসে আছেন ও আইনের কোন তোয়াক্কা করছেন না, সেই প্রশ্ন এখন জনমনে।

এ বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কামাল উদ্দিন জানান, আমি সভাপতির দায়ীত্ব গ্রহণের পর খোঁজ নিয়ে দেখেছি, সুমন মিয়া গত জানুয়ারী মাস থেকে অবৈতনিক ৬ মাসের ছুটি নিয়েছেন। এর আগের ৪ মাসে কীভাবে ছুটি কাটিয়েছেন সেটা তিনি জানেন না বলে সন্তব্য করেন। রহমত উল্লাহর সনদ না থাকার ব্যাপারেও বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে তিনি আশ্বস্ত করেন। সভাপতি আরো বলেন, কোন অনিয়ম থাকলে ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে অবশ্যই বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।