ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, শুধু জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নয় বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে শিক্ষকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তবে এর মধ্যে কিছু ব্যতিক্রম আছে। কিছু শিক্ষক আছেন যারা শিক্ষক নামে দলীয় কর্মকান্ড ও এজেন্ডা বাস্তবায়নে লিপ্ত রয়েছেন।

গতকাল শনিবার রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে শিক্ষা গবেষণা সংসদ-ঢাকা আয়োজিত জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শিক্ষকদের অবদান ও নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম কোরবান আলী এতে সভাপতিত্ব করেন।

মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবদুর রবের উপস্থাপিত প্রবন্ধের উপর আলোচনা পেশ করেন জগ্ননাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. বেলাল হোসাইন, বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক এবিএম ফজলুল করিম, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুল মান্নান, বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক নুর নবী মানিক, সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম, কারিগরি শিক্ষক পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ সৈয়দ আবুল আজিজ ও বাংলাদেশ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক পরিষদদের সেক্রেটারি ড. আবদস সবুর মাতাব্বরসহ শিক্ষক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

প্রধান অতিথি প্রফেসর ড. আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী বলেন, শুধু জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নয় বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে শিক্ষকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তবে এর মধ্যে কিছু ব্যতিক্রম আছে। কিছু শিক্ষক আছেন যারা শিক্ষক নামে দলীয় কর্মকান্ড ও এজেন্ডা বাস্তবায়নে লিপ্ত রয়েছেন। শিক্ষকতা আর রাজনীতি একত্রে চলে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাজনীতি গণতান্ত্রিক অধিকারের একটি অংশ। কিন্তু সেটি কোনমতেই শিক্ষক হয়ে রাজনৈতিক কর্মীর ভূমিকায় নয়। ক্যাম্পাসের ভিতরে যিনি শিক্ষক তাকে সেখানে কেবল শিক্ষক হিসেবেই ভূমিকা রাখতে হবে। রাজনৈতিক ভূমিকা রাখতে হলে ক্যাম্পাস ছেড়ে রাজপথে চলে যেতে তিনি অনুরোধ করেন। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে শিক্ষকদের ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের ভূমিকা ও ত্যাগ নিজ চোখে দেখার সুযোগ হয়েছে। গণতন্ত্রকামী দেশপ্রেমিক শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীর রক্ত মেনে নিতে পারেননি। তারাও জীবনের মায়া ত্যাগ করে শিক্ষার্থীর পাশে ছিল। তিনি নতুন বাংলাদেশ গড়তে শিক্ষকদের নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর এম কোরবান আলী বলেন, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান ছাত্র-শিক্ষক-জনতার ত্যাগে অর্জিত হয়েছে। এই অর্জনের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। ফ্যাসিবাদের সৃষ্টিতে এই শিক্ষকদের একটি অংশ অপরাধী। সেজন্য তারা একেবার একেক রূপে আত্মপ্রকাশ হয়ে ছাত্র-শিক্ষক-জনতার উপর আক্রমণের ষড়যন্ত্র করছে। চব্বিশের আন্দোলনে ফ্যাসিবাদের পতন না হলে আন্দোলনে ভূমিকা রাখা ছাত্র-শিক্ষক-জনতার কাউকে বাঁচিয়ে রাখতো না ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ। জাতির অর্জন নসাৎ করতে নানামূখী ষড়যন্ত্র চলছে। সকল ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করতে হবে। এজন্য ঐক্যে বিভাজন সৃষ্টি হতে দেওয়া যাবে না। পরাজিত শক্তি ও তাদের দোসরদের প্রথম কাজ হবে বিভাজন সৃষ্টি করা। এবিষয়ে সকলকে সজাগ থাকতে হবে। তিনি, আসন্ন নির্বাচনে শিক্ষকদের নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।