শহিদুল্লাহ মনসুর, জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ১৪ থেকে ১৭ জুলাই চলমান আন্দোলনে হামলার ঘটনায় ৯ জন শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত ও ২৮৯ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট। এছাড়া আরও ১০ শিক্ষকের সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখতে স্ট্রাকচার্ড কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বিশেষ সিন্ডিকেট সভায় আন্দোলনে হামলায় মদদ দেয়ার অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ, সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক আলমগীর কবির, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের তৎকালীন প্রাধ্যক্ষ ইস্রাফিল আহমেদ রঙ্গন, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী ইকবাল, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের তৎকালীন ডিন অধ্যাপক বশির আহমেদ, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আ. স. ম. ফিরোজ-উল-হাসান, ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও শেখ হাসিনা হলের তৎকালীন প্রাধ্যক্ষ হোসনে আরা, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের তৎকালীন প্রাধ্যক্ষ নাজমুল হোসেন তালুকদার এবং পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের অধ্যাপক তাজউদ্দীন শিকদার।

একইসঙ্গে আন্দোলনে হামলার ঘটনায় আরও ১০ জন শিক্ষকের সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখতে একটি স্ট্রাকচার্ড কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন অ্যাকাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের প্রভাষক কানন কুমার সেন, আইবিএ’র সহকারী অধ্যাপক পলাশ সাহা, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শফি মোহাম্মদ তারেক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জহিরুল ইসলাম খোন্দকার, অধ্যাপক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মনির উদ্দিন শিকদার, লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ ছায়েদুর রহমান, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক আনোয়ার খসরু পারভেজ, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মহিবুর রৌফ শৈবাল এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ এ মামুন।

এদিকে, আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ২৮৯ জন শিক্ষার্থীকে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তাদের সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃতদের মধ্যে যাদের ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে, তাদের সনদপত্র স্থগিত করা হয়েছে। যেসব শিক্ষার্থী ইতোমধ্যে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পরীক্ষা দিয়েছেন, তাদের ফলাফল স্থগিত রাখা হয়েছে। আর নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

এছাড়া, আন্দোলনে হামলার ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার দায়ে সাবেক ভিসি অধ্যাপক মো. নূরুল আলম এবং সাবেক রেজিস্ট্রার আবু হাসানের পেনশন তদন্ত কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিন্ডিকেট।

একই ঘটনায় জাবির দুই কর্মকর্তা নাহিদুর রহমান খান ও রাজীব চক্রবর্তী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের তৎকালীন ‘হল এটেন্ডেন্ট’ মুহসিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সিন্ডিকেট সভায় গৃহীত এসব সিদ্ধান্তের কথা নিশ্চিত করেছেন ভিসি অধ্যাপক কামরুল আহসান।