ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহ হত্যার তদন্ত ও বিচার অতি দ্রুত নিশ্চিত এবং ক্যাম্পাস বিনির্মাণে ছাত্রশিবির প্রদত্ত ২৪ দফা সংবলিত ১১০টি প্রস্তাবনা বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ইবি শাখা ছাত্রশিবির। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড় টার দিকে প্রশাসন ভবন চত্বরে এই মানববন্ধন করে সংগঠনটি।
এসময় ইবি শাখা ছাত্রশিবির সেক্রেটারি ইউসুব আলী, অফিস সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রাফী, আন্তর্জাতিক ও এডুকেশন এ্যান্ড স্কিল ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক হাসানুল বান্না অলী, প্রচার সম্পাদক সৈয়দ আবসার নবী হামযা, শিক্ষা সম্পাদক আব্দুল্লাহ অলিসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
শাখা ছাত্রশিবির সেক্রেটারি ইউসুব আলী বলেন, “সাজিদ আব্দুল্লাহর লাশ ৫৩ দিনে আগে ইবির হল পুকুরে পাওয়া গেলেও প্রশাসন কর্তৃক দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ আমরা দেখতে পাইনি। এই হত্যা মামলাটি এখনো পর্যন্ত কোনো তদন্তকারী সংস্থার হাতে না দিয়ে হেডকোয়াটারে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। কোন শক্তির হস্তক্ষেপে এই মামলাটি এখনো তদন্তকারী সংস্থার কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে না? এটা আমরা জানতে চাই। জুলাই শহীদদের রক্তের উপর দিয়ে আসা প্রশাসন থেকে আমাদের আশা ছিল যে তারা একটি শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস নিশ্চিত করবে। কিন্তু আমরা পেয়েছি আমার ভাইয়ের লাশ।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা একটি যুগপযোগী শিক্ষার্থীবান্ধব ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে, গত আগস্ট পরবর্তীতে ২৪ দফা দাবি সম্বলিত ১১০ টি প্রস্তাবনা প্রশাসন বরাবর পেশ করেছিলাম। এই প্রস্তাবনার সিংহভাগ প্রশাসন বাস্তবায়নের কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। আমরা চাই অতিসত্বর শিক্ষার্থী বান্ধব এই প্রস্তাবনা গুলোর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। ইকসু গঠনে একটি কমিটি গঠন করা হলেও এর কোনো বাস্তব প্রদক্ষেপ আমরা দেখতে পাচ্ছি না।
প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আমাদের দাবি সাজিদ আবদুল্লাহকে নিজের সন্তান মনে করে তার হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত প্রতিটি ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে তাদেরকে দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে। আগামী দুই দিনের মধ্যে তদন্তকারী সংস্থার হাতে তদন্ত হস্তান্তর করতে হবে। দ্রুত শিক্ষার্থীবান্ধব ২৪ দফার ১১০ টি প্রস্তাবনা গুলোর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে । তা না হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কে সাথে নিয়ে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ক্যাম্পাস অচল করে দিতে বাধ্য হবে। আর ছাত্রশিবির যদি সাধারণ শিক্ষার্থীদের কে সাথে নিয়ে প্রধান ফটোকে তালা দিয়ে দেয় তাহলে সেই তালা খোলার সাধ্য প্রশাসনের থাকবে না।”
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৩০ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, চব্বিশের জুলাই বিপ্লব পরবর্তী ফ্যাসিবাদমুক্ত ক্যাম্পাস বিনির্মাণ ও ক্যাম্পাসের চলমান সংকট নিরসনের লক্ষ্যে প্রশাসন বরাবর ২৪ টি দফায় ১১০ টি দাবি সম্বলিত এক স¥ারকলিপি দেয় শাখা ছাত্রশিবির । ২৪ দফার উল্লেখযোগ্য দাবি গুলো হলো আওয়ামী দুঃশাসনে অনিয়মের তদন্ত ও আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ, বিভিন্ন স্থাপনার নাম পরিবর্তন, জুলাই বিপ্লবের স্মৃতি সংরক্ষণ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষণ, আবাসিক হল সংক্রান্ত, বিভাগ, অনুষদ ও একাডেমিক কার্যক্রম, নিরাপদ ও মাদকমুক্ত ক্যাম্পাস, কেন্দ্রীয় গ্রন্থগার সংস্কার, ধর্মীয় উপাসনালয়, চিকিৎসা সেবা প্রবৃদ্ধি, ছাত্র সংসদ, প্রশাসনিক কার্যক্রম, গবেষণা বৃদ্ধি, পরিবহন সেবা, ভর্তি পরীক্ষা, আইআইইআর, মরণব্যাধি নিরাময় তহবিল ও ছাত্রকল্যাণ ফান্ড, গ্রিন ক্যাম্পাস-ক্লিন ক্যাম্পাস, ক্যাফেটেরিয়া ও ক্যান্টিন চালু বিষয়ক, মননশীল সাংস্কৃতিক চর্চা, ক্রীড়া ও শরীরচর্চা ক্ষেত্র, নিয়োগ প্রক্রিয়া, ক্যাম্পাসের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও বিবিধ সংস্করণ।