জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) দ্রুততম সময়ে জুলাই হামলাকারীদের বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন ও ৩০ এপ্রিলের মধ্যে জাকসুর তফসিল ঘোষণার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। এসময় আগামীকালের মধ্যে জাকসু নির্বাচনের তফসিল না হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে জুলাইয়ের মতো ক্যাম্পাসের সর্বত্র আন্দোলন গড়ে তোলার হুশিয়ার দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল।

এসময় আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, “আপনারা একাধিকবার অছাত্রদের হল থেকে বের করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু পরে আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ লক্ষ্য করিনি। এতে বোঝা যায়, আপনারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণার পথেই হাঁটছেন। আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিচ্ছি—বিগত দিনে যেমন শিক্ষার্থীরা প্রতারিত হয়েছে, এবার আর আমরা প্রতারিত হতে চাই না। আগামীকাল যদি তফসিল ঘোষণা না করা হয়, তাহলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীকে সঙ্গে নিয়ে সর্বত্র আন্দোলন গড়ে তুলব।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আহসান লাবীব বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের পর যে প্রশাসন গঠিত হয়েছে, তাদের কাছে বারবার আমাদের দাবি নিয়ে আসতে হচ্ছে—এটা শিক্ষার্থীদের জন্য লজ্জাজনক। প্রশাসন বারবার জাকসু ও জুলাইয়ের বিচার নিয়ে টালবাহানা করছে। কিছু মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থী চায় না যে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের দ্বারা জাকসু গঠিত হোক, কারণ তারা জানে—নিয়মিত শিক্ষার্থীরা ক্ষমতায় এলে টেন্ডারবাজি বা চাঁদাবাজি সম্ভব হবে না। প্রশাসনকে মনে করিয়ে দিতে চাই, যদি আপনারা শিক্ষার্থীবান্ধব না হন, আপনাদের অবস্থাও খুব বেশি ভালো থাকবে না।”

নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম লিমন বলেন, “জাকসুকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে। আট মাস পার হলেও এখনও গণ-অভ্যুত্থানের বিচার হয়নি। যখনই জাকসুর তফসিল ঘোষণার সময় আসে, তখনই প্রশাসন টালবাহানা শুরু করে। আগামীকাল তফসিল ঘোষণা করতেই হবে। যদি না করে, তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও দেখে নেবে—আপনারা কিভাবে সেই গদিতে বসে থাকেন।”

৫১তম আবর্তনের শিক্ষার্থী নাদিয়া রহমান বলেন, “বর্তমান প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই কোনো না কোনোভাবে জাকসু পেছানোর চেষ্টা করছে। ক্যাম্পাসে জাকসু না থাকায় বিগত প্রশাসনগুলো স্বৈরাচার হয়ে উঠেছিল, আমরা চাই না আবার সেই অবস্থা ফিরে আসুক। এছাড়া জুলাই হামলার নয় মাস পেরিয়ে গেলেও হামলার বিচার এখনও হয়নি। হামলাকারীরা ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে—এতে আমরা শঙ্কিত। প্রশাসনের প্রতি আহ্বান, দ্রুত হামলাকারীদের বিচার সম্পন্ন করুন এবং আগামীকাল তফসিল ঘোষণার যে সময়সীমা দেওয়া হয়েছে, তা বাস্তবায়ন করুন।”