তিন দফা দাবি আদায়ে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে তারা শাহবাগ অবরোধ করলে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাত সাড়ে ৮টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা শাহবাগে অবস্থান করছিলেন।

তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- নবম গ্রেডের ইঞ্জিনিয়ারিং পদ বা সহকারী প্রকৌশলী বা সমমানের পদে প্রবেশের জন্য সকলকে নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে এবং প্রার্থীর কমপক্ষে বিএসসি ডিগ্রি থাকতে হবে। কোটার মাধ্যমে পদোন্নতি দেওয়া যাবে না। এমনকি বিভিন্ন নামে সমমানের পদ সৃষ্টি করেও পদোন্নতি দেওয়া যাবে না। দশম গ্রেডের কারিগরি পদ বা উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমানের পদের জন্য নিয়োগ পরীক্ষা ডিপ্লোমা এবং বিএসসি ডিগ্রিধারীদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ডিগ্রি না থাকলেও ইঞ্জিনিয়ার পদবি ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নিশাদ রহমান বলেন, ‘এটি আমাদের দীর্ঘদিনের আন্দোলন। কিন্তু সরকার আমাদের দাবির প্রতি কোনো কর্ণপাত করছে না। তাই আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি।’

প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের সহসভাপতি শাকিল আহমেদ বলেন, আমরা আল্টিমেটাম দিচ্ছি, রাত আটটার মধ্যে এসে আমাদের সঙ্গে বসে এই সমস্যার সমাধান করতে হবে আপনাদের। নইলে আমরা এর চেয়ে আরও কঠোর থেকে কঠোরতর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব। শাকিল আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, তারা ছয় মাস ধরে দাবি জানিয়ে এলেও সরকার এসব দাবি পূরণে কাজ করেনি। সে কারণে সরকার তাঁদের রাস্তায় নামতে বাধ্য করেছে।

এদিকে শিক্ষার্থীরা ব্যস্ততম শাহবাগ মোড় অবরোধ করায় যানজটের ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিস শেষে ঘরমুখী মানুষ। বেলা তিনটা থেকে অবরোধের কারণে শাহবাগ মোড় দিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে আশপাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। সরেজমিনে দেখা যায়, মৎস্য ভবন হয়ে শাহবাগ দিয়ে বিভিন্ন গন্তব্যে যেসব বাস চলাচল করে, সেগুলো শাহবাগ মোড়ে এসে ফিরে যাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে যেসব যানবাহন শাহবাগ হয়ে বিভিন্ন গন্তব্যে যায়, সেসব যানবাহনকে শাহবাগ মোড় পার হতে দেওয়া হচ্ছে না। কাঁটাবন মোড় হয়ে শাহবাগের দিকে আসা গাড়িগুলো রাস্তায় আটকে আছে। সন্তানের চিকিৎসার জন্য শাহবাগে অবস্থিত বারডেম হাসপাতালে এসেছিলেন তাসমিয়া রহিম। তিনি বলেন, যাত্রাবাড়ী থেকে হাসপাতালে আসতে গিয়ে মৎস্য ভবন মোড়ে এসে তিনি শোনেন যে বাস আর সামনে যাবে না। রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলন হচ্ছে। পরে সন্তানকে কোলে নিয়ে হেঁটে হেঁটে হাসপাতালে এসেছেন।