জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) প্রশাসনের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত তথ্য তৃতীয় পক্ষের কাছে পাচারের অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দাবি করছেন, তাদের ব্যক্তিগত তথ্য প্রশাসনের সহায়তায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সংগ্রহ করেছে। শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।

আজ (১৬ মে) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বারে এক খুদে বার্তা প্রেরণ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল। খুদে বার্তা পাওয়া পরেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে শুরু হয় উত্তেজনা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তায় ছাত্রদল তাদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করেছে। এই তথ্যের মাধ্যমে ছাত্রদল শিক্ষার্থীদের ফোনে খুদে বার্তা প্রেরণ করছে, যা শিক্ষার্থীদের গোপনীয়তা লঙ্ঘন করছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু তৌহিদ মোঃ সিয়াম তার ফেসবুকে লেখেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীরা যেই নাম্বার আমরা ভর্তি হওয়ার সময় ব্যবহার করেছিলাম সেই নাম্বারে ছাত্রদলের মেসেজ এসেছে। যার যার পিতা মাতার নাম্বার দেওয়া ছিলো নিজের নাম্বারের জায়গায় সেটাতেও গিয়েছে।

তিনি আরও লেখেন, একটা রাজনৈতিক দলের হাতে শিক্ষার্থীদের এই তথ্য কারা তুলে দিলো? আমাদের এই প্রাইভেসি রক্ষার দায়িত্ব তো প্রশাসনকে আমরা দিয়েছিলাম। প্রশাসন এটা কিভাবে কারো হাতে এটা তুলে দিলো? আমরা কিভাবে নিশ্চয়তা পাবো যে প্রশাসন আমাদের অন্য আরো যাবতীয় তথ্য বিক্রি করে দেয়নাই! বা স্বার্থ হাসিলের জন্য এমনই কারো হাতে তুলে দেয়নাই!

বিশ্ববিদ্যালয় এমন একটি কাজ কিভাবে করলো! এইটার সুরাহা, এইটার জবাব প্রশাসনকে দিতেই হবে।

এবিষয়ে গণমাধ্যমকে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দীন মোহাম্মদ বাবর বলেন, আমরা তথ্য সংগ্রহ করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের থেকে কোনোরকম সহযোগিতা নেইনি। যদি এমন হতো তাহলে আমরা আমাদের কর্মসূচির প্রথম দিনেই মেসেজ সেন্ড করতে পারতাম। আমাদের স্বেচ্ছাসেবী এবং কর্মীরা নিজ উদ্যোগে বিভিন্ন মাধ্যমে এসব তথ্য সংগ্রহ করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়কে দেয়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের ফোন নাম্বারেও মেসেজ যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি যতটুকু জানি শিক্ষার্থীদের এসকল তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটেও দেয়া আছে সার্চ দিলে চলে আসে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিবৃতি দেয়নি। তবে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, বিষয়টি আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখছি। রাত দশটায় জরুরি সভা ডাকা হয়েছে। কিভাবে এই ঘটনাটি ঘটলো, এর সাথে কে জড়িত তা আমরা খুঁজে বের করবো। সভা শেষে আমরা বিস্তারিত তথ্য ব্রিফ করবো।