চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (চাকসু) নির্বাচনের খসড়া আচরণবিধি নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভা বর্জন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল (ছাত্রদল) শাখা। নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার মধ্য দিয়ে সভা বর্জনের ঘোষণা দেয় তারা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ অডিটোরিয়ামে চাকসু নির্বাচন কমিশন এ সভার আয়োজন করে। এতে চবির সক্রিয় ছাত্র সংগঠনগুলোর প্রতিনিধি ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
সভা চলাকালীন আয়োজকদের আচরণ ও সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে ছাত্রদলের প্রতিনিধি দল। প্রথমে তারা হট্টগোল সৃষ্টি করে এবং পরে সভা বর্জনের ঘোষণা দিয়ে সভাস্থল ত্যাগ করে। চবি শাখা ছাত্রদলের অভিযোগ, সভার শুরুতেই নিয়ম করা হয় একজন শিক্ষার্থী একটির বেশি প্রশ্ন করতে পারবে না। এতে শিক্ষার্থীদের মতামত প্রদানের সুযোগ সীমিত করা হয়েছে বলে মনে করে তারা। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তর কমিশনের পক্ষ থেকে না দিয়ে বারবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে পাঠানো হচ্ছিল, যা কমিশনের স্বাধীনতা নিয়ে সন্দেহ তৈরি করেছে।
সভাস্থল ছাড়ার সময় চবি ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ওপর শিক্ষার্থীদের আস্থা নেই। যে প্রশাসনের ওপর শিক্ষার্থীরা আস্থা হারিয়েছে, তাদের গঠিত কমিশন কতটা স্বাধীন তা নিয়েও আমরা সন্দিহান। এই কারণে শুধু ছাত্রদল নয়, অনেক সাধারণ শিক্ষার্থীও সভা বর্জন করেছেন।” চবি ছাত্রদলের সাবেক মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক জালাল সিদ্দিকী বলেন, “সভায় শিক্ষার্থীদের মতামত উপেক্ষা করা হয়েছে। যে কমিশন শিক্ষার্থীদের কথা শোনে না, তাদের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।”
অন্যদিকে, মতবিনিময় সভা বর্জনের বিষয়ে জানতে চাইলে এ কে এম আরিফুল হক সিদ্দিকী, চাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব বলেন, “ছাত্রদল সভা ত্যাগ করেছে। তবে এটি শেষ সভা নয়, আরও মতবিনিময় সভা হবে। গঠনতন্ত্র পরিবর্তনসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এখতিয়ারভুক্ত। প্রশাসন যেভাবে গঠনতন্ত্র দেবে, কমিশন সেভাবেই কাজ করবে। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
এ সময় মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার মনির উদ্দিন, সদস্যসচিব এ কে এম আরিফুল হক সিদ্দিকী, সদস্য বেগম ইসমত আরা হক, আমির মুহাম্মদ নসরুল্লাহ, আনোয়ার হোসেন, মমতাজ উদ্দিন আহমদ এবং জাহেদুর রহমান চৌধুরী।