খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বিকেল ৩টা থেকে কুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিষদ ভবন চত্বরে কর্মসূচি শুরু করেন। এর আগে দুপুর ১২ টার কিছু পরে একই স্থানে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন কুয়েটের নতুন ছাত্রকল্যাণ পরিচালক প্রফেসর ড. মো. আব্দুল্লাহ ইলিয়াস। তিনি বলেন, আমার ছাত্রদের সাথে কথা বলছি। আবারও আলোচনায় বসবো। যা কিছু হোক, আলোচনার টেবিলে বসে সমস্যার সমাধান করবো।

শিক্ষকদের সে আহ্বানে সাড়া না দিয়ে একদফা কর্মসূচিতে অনড় থাকায় পরিস্থিতি নতুন দিকে মোড় নিয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। তবে শিক্ষকদেরকে অনশনস্থলে এসে ছাত্রদের পাশে অবস্থান নিয়ে তাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করতে দেখা গেছে।

জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে নতুন ছাত্রকল্যাণ পরিচালক প্রফেসর ড. মো. আব্দুল্লাহ ইলিয়াছ আক্তার বলেন, ‘আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি ছাত্রদের সাথে আলোচনার। একটু আগেও আলোচনা করেছি । সংবাদ সম্মেলনের পরও বসবো। আমরা বলেছি, আলোচনার টেবিলেই সবকিছু সমাধান সম্ভব’। ছাত্রকল্যাণ পরিচালক বলেন, ছাত্রদের সাথে আলোচনা চলছে। আমরা তাদের নিয়ে বসেছি। তারা তাদের সমস্যার জায়গাগুলো আমাদের জানাবে। তাদের সকল সমস্যা যাতে দ্রুত সমাধান করা যায় সে লক্ষ্যে ছাত্র ও শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনা চলছে। ছাত্ররা আমাদের সন্তানের মত। তারা কোন অন্যায় বা ভুল করতে পারে। এমনকি আমরাও ভুলের ঊর্ধ্বে নই। শিক্ষক হিসেবে আমাদের অগ্রাধিকার সব সময় শিক্ষার্থী। তাদেরকে নিয়ে আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। প্রতিটা ছাত্রের যাতে কোন সমস্যা না হয় সে লক্ষ্যে কাজ করার জন্য আমি বদ্ধপরিকর। আমি একটি বিষয় নিশ্চিত করতে চাইÑ ‘ছাত্রদের কোন বিষয়ে কোন সমস্যা হলে তার সমাধান করা আমার অন্যতম ও প্রধান দায়িত্ব’।

তিনি আরো বলেন, ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। উক্ত বহিষ্কার কিন্তু চূড়ান্ত বহিষ্কার নয়। এখানে ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটি বসবে। যে ছাত্রদের সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে তাদেরকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হবে। নিরপরাধ কেউ যেন কোন প্রকার শাস্তির মুখোমুখি না হয় সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”

ছাত্রকল্যাণ শাখার সহকারী পরিচালক রাজু আহমেদ জানান, বাইরের এক ব্যক্তি ২২ জন ছাত্রের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। আমরা বলেছি তাদেরকে সম্পূর্ণ আইনগত সহায়তা দেওয়া হবে। মামলা প্রত্যাহারের জন্য আমরা চেষ্টা চালাবো। মারামারির ঘটনায় আহত ২০ শিক্ষার্থীকে কুয়েটের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

ব্রিফিং শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন পরিচালক (ছাত্রকল্যাণ) ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ। কিন্তু শিক্ষকদের ওই আহ্বানে সাড়া না দিয়ে শিক্ষার্থীরা অনশন শুরু করেন। পাশাপাশি শিক্ষকরাও তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছেন। অনশনের মধ্যেই আলোচনা চলছে। তবে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিতে অনড় রয়েছেন।