খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সমস্যার সমাধান যেন শেষ হয়েও হচ্ছে না। যে কারণে ভেঙে পড়েছে শিক্ষাব্যবস্থা। কিছুদিন আগে আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা। এবার আন্দোলন করছেন শিক্ষকেরা। এতে করে একাডেমিক কার্যক্রম চালু হওয়ার ৪র্থ দিনেও বুধবার (৭ মে) ক্লাসে যাননি তারা। এ অবস্থায় দীর্ঘ সেশনজটের আশঙ্কা করছেন ৭ হাজার ৫৬৫ জন শিক্ষার্থী।

জানা গেছে, আড়াই মাস পর রোববার (৪ মে) কুয়েটের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা থাকলেও শিক্ষক সমিতি ক্লাস বর্জন করায় সেই থেকে ক্লাস হচ্ছে না। শিক্ষক-শিক্ষার্থী না থাকায় ক্লাসরুমগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। মেঝে ও চেয়ার-টেবিলে ধুলোর আস্তরণ জমেছে। এই অবস্থায় শিক্ষাকার্যক্রম চালুর অনুরোধ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। কুয়েটের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা।

কুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল্লাহ ইলিয়াছ আক্তার বলেন, শিক্ষক সমিতি ক্লাস বর্জন করায় কুয়েটে ক্লাস হচ্ছে না। শিক্ষকরা ক্লাসে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন।

এদিকে শিক্ষকদের কাছে দুই দফায় ক্ষমা চেয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এরপরও শিক্ষকরা ক্লাসে ফেরেননি। দীর্ঘদিন ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকায় লেখাপড়ায় পিছিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া সেশনজটেরও আশংকা করছেন তারা।

কুয়েট শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগ তুলে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে শিক্ষক সমিতি। সোমবার (৫ মে) দুপুরে কুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা শেষে সমিতির নেতারা সাংবাদিক সম্মেলনে তাদের দাবি দাওয়ার কথা জানান।

উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে শিক্ষার্থীদের উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষিতে ভিসি, প্রোভিসি এবং ডিএসডাবলিউর পদত্যাগ দাবি করেন শিক্ষার্থীরা। ‎দীর্ঘ প্রায় আড়াই মাস টানা আন্দোলন এবং ভিসির পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আমৃত্যু অনশন কর্মসূচির প্রেক্ষিতে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ভিসি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ এবং প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. শেখ শরীফুল আলমকে অপসারণ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এ এস এম কাসেম স্বাক্ষরিত দুটি পৃথক প্রজ্ঞাপনে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। বৃহস্পতিবার (১ মে) কুয়েটের ভারপ্রাপ্ত ভিসি হিসেবে নিয়োগ পান চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)’র পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলী। শুক্রবার (২ মে) রাতে তিনি কুয়েটে পৌঁছান। শনিবার (৩ মে) অনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি।