গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি আর ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে লালমনিরহাটের তিস্তা নদীর পানি হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে। এতে তিস্তা পাড়ের মানুষজন বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা করছেন এবং যেকোনো সময় তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। ফলে পানি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
রোববার (১ জুন) তিস্তার পানি সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ৫১ দশমিক ৮৬ মিটার, যা বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এর আগে, শনিবার (৩১ মে) বিকেল ৩টার দিকে পানি উচ্চতা রেকর্ড করা হয় ৫১ দশমিক ২৭ সেন্টিমিটার।
জানা গেছে, টানা কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টিপাত ও উজানের থেকে ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করেছে। এতে তিস্তার চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চলের বিভিন্ন ধরনের ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নদীর তীরবর্তী ও চরাঞ্চলে বসবাসরত মানুষজন বন্যা ও নদীভাঙন আতঙ্কে পড়েছেন।
এদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের ৮-১০টি চর এলাকায় পানি উঠতে পারে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এছাড়াও লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা, রাজপুর, খুনিয়াগাছ ইউনিয়ন এবং আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ও গোর্বধন এলাকার নিম্নাঞ্চল পানিতে প্লাবিত হয়েছে। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি আবারো বাড়তে শুরু করেছে। ফলে লালমনিরহাটসহ উত্তরের কয়েকটি জেলায় তিস্তা পাড়ের হাজারো মানুষ বন্যা নিয়ে শঙ্কায় আছেন।
হাতীবান্ধা উপজেলার চর ডাউয়াবাড়ী এলাকার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বন্যা এলে সবকিছু শেষ হয়ে যায়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মাঠের ফসল, গরু-ছাগল, বাড়ির জিনিস সব ভেসে যায়। এবারো ভয়ে আছি।’
এ বিষয়ে লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার বলেন, ‘উজানে ভারতের সিকিমে ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে তিস্তার পানি হঠাৎ করে বাড়তে শুরু করেছে। পানি এখনো বিপৎসীমার নিচে আছে, তবুও আমরা সতর্ক আছি।’