ফেনীতে গত তিন দিনের টানা বর্ষণ ও ভারতীয় উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে মুহুরী, সিলোনিয়া ও কুহুয়া নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ১২.৫৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে অন্যান্য নদীর পানিও আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে পরশুরামের মনিপুর ও সুবারবাজার সংলগ্ন এলাকাসহ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। একইসঙ্গে ফুলগাজীর উত্তর বরইয়া বনিক পাড়াতেও বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে বাঁধ ভেঙে বন্যা দেখা দিয়েছে।

পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী মো. ফাহাদ্দিস হোসাইন জানান, “উজানে ভারী বর্ষণের কারণে নদীর পানি বাড়ছে। মুহুরী নদীর পানি ইতিমধ্যে বিপদসীমার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ রক্ষায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি, কিন্তু পানির চাপ বেশি হওয়ায় অনেক জায়গায় ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না।”

পাউবো সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধগুলোর মেরামত এখনো শেষ হয়নি। এমন অবস্থায় আবারও পানি বৃদ্ধিতে অসমাপ্ত বাঁধগুলোর বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ফুলগাজী ও পরশুরামে বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছেন অন্তত ৩০ থেকে ৪০ হাজার মানুষ।

এ বিষয়ে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আক্তার হোসেন মজুমদার বলেন, “ফুলগাজী-পরশুরামের বন্যা নিয়ন্ত্রণে টেকসই বাঁধ নির্মাণের জন্য একটি ৭,৩৪০ কোটি টাকার প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এটি এখন অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।”

এদিকে ফেনী জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম বৃহস্পতিবার বিকেলে ফুলগাজী ও পরশুরামের ভাঙন কবলিত নদীবাঁধ এলাকা পরিদর্শন করেন। তার সঙ্গে ছিলেন পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় ইউএনও।

এলাকাবাসীরা জানান, গত বছরের ভয়াবহ বন্যার স্মৃতি এখনো ভোলেনি তারা। বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে স্থানীয়রা দ্রুত টেকসই এবং পরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।