DailySangram-Logo-en-H90
ই-পেপার আজকের পত্রিকা

পরিবেশ

ইনানী সমুদ্র সৌকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিনষ্টের পথে, বন প্রশাসন নিরব

বীচের পার্শ্বে সাইডে ইকোলজিক্যাল ক্রিটিকাল এরিয়া (ইসিএ) এ অবস্থিত ঝাউ বাগানসমুহ। এ বাগানগুলো প্রাকৃতিক দূর্যোগ, ঘূর্ণিঝড়, দৈবদূর্বিপাকে মেরিনড্রাইভ ও অত্র এলাকাকে রক্ষাকারী বা বর্ম হিসেবে কাজ করে। ইদানিংকালে, ইসিএ এলাকায় অবস্থিত বিভিন্ন ঝাউ বাগানের গাছগুলো দিবালোকে বনবিভাগের নাকের ডগায় কেটে সাবাড় করলেও বন প্রশাসন ও ইনানী রেঞ্জ কর্মকর্তার কূম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙেনি।

উপজেলা সংবাদদাতা
Untitled

মুহাম্মদ রিদুয়ানুল হক জিসান, উখিয়া প্রতিনিধিঃ বীচের পার্শ্বে সাইডে ইকোলজিক্যাল ক্রিটিকাল এরিয়া (ইসিএ) এ অবস্থিত ঝাউ বাগানসমুহ। এ বাগানগুলো প্রাকৃতিক দূর্যোগ, ঘূর্ণিঝড়, দৈবদূর্বিপাকে মেরিনড্রাইভ ও অত্র এলাকাকে রক্ষাকারী বা বর্ম হিসেবে কাজ করে। ইদানিংকালে, ইসিএ এলাকায় অবস্থিত বিভিন্ন ঝাউ বাগানের গাছগুলো দিবালোকে বনবিভাগের নাকের ডগায় কেটে সাবাড় করলেও বন প্রশাসন ও ইনানী রেঞ্জ কর্মকর্তার কূম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙেনি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইনানী রেঞ্জের অদুরে সোনার পাড়া, নিদানিয়া ও ডেইল পাড়া রয়েল হ্যাচারীর সামনের ঝাউ গাছ গুলো কেটে সাবাড় করা হয়েছে। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ইনানী সমুদ্র সৈকতের পাদদেশে বিশাল বিশাল ঝাউ বাগান-যা প্রায় ১৫/২০ বছর যাবৎ অত্র এলাকাকে পরিবেশ, প্রতিবেশ, প্রাণ-প্রকৃতিকে যেমন সুরক্ষা দিয়ে আসছে, তেমনি প্রতিবছর সমুদ্র পৃষ্টে সৃষ্ট নানাবিধ প্রাকৃতিক দূর্যোগ, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, প্লাবন থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষাকবজ হিসেবে কাজ করছে।

ইনানী সমুদ্র সৈকত বিশাল আকাশ, পাহাড়, বনানী, সমতল ভুমি নিয়ে গঠিত। প্রতি বছর দেশ বিদেশের লক্ষ লক্ষ পর্যটক ইনানীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভুমির এসব অনুষঙ্গ অবলোকন করার জন্য ভীড় জমায়। পর্যটনের অন্যতম অংশ মেরিন ড্রাইভ সড়ক এই সড়কের পার্শ্ব দিয়ে ৭০/৮০ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকতের বালিয়াড়িতে চোখ জুড়ানো ঝাউ বাগান দেখে পর্যটকের মন জুড়িয়ে যায়।

ইনানীর অদুরে জেলে পল্লী ও নৌকা বেড়ানোর অনুকুল পরিবেশ হওয়ায়, জেলেরা রান্না বান্নার কাজে যেমন কাঠ হিসেবে অত্র ঝাউ বাগানকে ব্যবহার করছে আবার নৌকা, ট্রলার তৈরি ও মেরামতের কাজে ঝাউ গাছ ব্যবহার করার ফলে তা কেটে বাগান সাবাড় করছে। অন্যদিকে মেরিন ড্রাইভ রোডকে সম্প্রসারণ করতে গিয়েও ঝাউ বাগান কেটে উজাড় করা হয়েছে-যা অত্র এলাকার পরিবেশের উপর মারাত্মক হুমকি হিসেবে কাজ করছে।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, এলাকার কিছু দুষ্টু চক্রের কারনেই দিন দিন সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য বিলীন হচ্ছে-নিধন হচ্ছে ঝাউবাগান, পাহাড়, প্রান-প্রকৃতি, পরিবেশ-প্রতিবেশ। এ ব্যাপারে তারা বনপ্রশাসন ও সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ ব্যাপারে ইনানী রেঞ্জ কর্মকর্তা ফিরোজ আহমদের সাথে আলাপে তিনি বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমরা সর্বসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি আমাদের রেঞ্জের প্রতিটি ভুমির গাছ-পালা, বন, জঙ্গল, পাহাড় পর্বত, নদী নালা, প্রাণ প্রকৃতিকে রক্ষা করার। কিন্তু ইনানী রেঞ্জ বিশাল এলাকা নিয়ে গঠিত, কিন্তু আমাদের লোকবল প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল হওয়ায় ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তা রক্ষা করতে সক্ষম হচ্ছি না। তারপরেও আমাদের চেষ্টার অন্ত নেই।

যেভাবে ঝাউবাগান, গাছপালা, পাহাড় পর্বত কেটে উজাড় করা হচ্ছে, তা বন্ধে সরকার, প্রশাসন ও সচেতন সমাজ এগিয়ে না আসলে অচিরেই ইনানী সমুদ্র সৌকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিনষ্ট হয়ে পর্যটন আকর্ষণের এসব অনুষঙ্গ বিলীন হয়ে পর্যটন শিল্পেও ধ্বস নামবে। অন্যদিকে ইনানীর উপকুল ভাগ সমুদ্রগর্ভে হারিয়ে যাবার উপক্রম ঘটবে।