ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন ডা. জিল্লুর রহমান বলেছেন, টাইফয়েড টিকা নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। বিশ্বের ২১টি দেশে বর্তমানে এই টিকা কার্যক্রম চলছে এবং কোথাও কোনো সমস্যা হয়নি। তাই সকল অভিভাকদের তাদরে শিশুদেরকে টিকা কেন্দ্র নিয়ে নিবন্ধনের মাধ্যমে টাকা দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে টাইফয়েড ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইন ২০২৫’ এর মাসব্যাপী ক্যাম্পেইন আগামী ১২ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে।
তিনি বলেছেন, টাইফয়েট টিকা নিলে শিশু-কিশোরদের কোনো সমস্যা হবে না। এমনকি নিবন্ধন ছাড়াও টিকা দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। যদি কেউ নিবন্ধন নাও করতে পারে টিকার বাইরে থাকবে না। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে টাইফয়েড টিকা বিষয়ে পরামর্শমূলক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সিভিল সার্জন ডা. জিল্লুর রহমান বলেন, প্রতিটি টিকা কেন্দ্রে আমাদের প্রস্তুতি থাকবে। কেন্দ্রগুলোতে আমাদের প্রতিনিধি থাকবে, শিশুকে টিকা দেয়ার পর কোনো ধরণের সমস্যা দেখা গেলে তাৎক্ষনিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। তিনি বলেন, আগে থেকেই কারো জ¦র, এলার্জি থাকলে এই টিকা পরে দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। জিল্লুর রহমান বলেন, কোনো একটি শিশুকেও আমরা টিকার বাইরে রাখতে চাই না। আর নিবন্ধন করা হলে টিকা কার্ড পাবে। এই টিকা কার্ড ভবিষ্যতে অনেক গুরত্বপূর্ণ কাজে প্রয়োজন হবে। তাই নিবন্ধ করে টিকে নিলেই সুবিধা বেশি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ডা. জিল্লুর রহমান জানান, সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ঊচও)-এর আওতায় পরিচালিত এই ক্যাম্পেইনের লক্ষ্য হলো টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধ, সংক্রমণ হ্রাস, জ্বরের কারনে সৃষ্ট জটিলতা ও মৃত্যুঝুঁকি হ্রাস করা। ক্যাম্পেইনটি সারাদেশে ৪ সপ্তাহব্যাপী চলবে, এর মধ্যে প্রথম ১০ কার্যদিবসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্থায়ী কেন্দ্রসমূহে টিকা প্রদান করা হবে এবং পরবর্তী ৮ কার্যদিবসে স্থায়ী ও অস্থায়ী কেন্দ্রসমূহে টিকা প্রদান কার্যক্রম চলবে। টিকাদান কার্যক্রম চলাকলীন সময়েও ওয়েবসাইটে রেজিষ্ট্রেশন চলমান থাকবে। ঢাকা জেলার ঞঈঠ টিকার জন্য মোট ১০ লাখ ৩৩ হাজার ৯ শত ৪২ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি এবং এ পর্যন্ত রেজিস্টেশন হয়েছে ২ লাখ ৩৭ হাজার ৪ শত ৭৭ জনের রেজিষ্ট্রেশন হয়েছে। যা চলমান আছে।
কর্মশালায়, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. সরকার ফারহানা কবীর বলেন, এই টিকায় ভয়ের কিছু নেই। তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগত বলতে চাই, ইতিমধ্যে আমার দুই সন্তানকে নিবন্ধন করিয়েছি। আপনারাও আপনাদের সন্তানদের নির্ভয়ে টিকার জন্য নিবন্ধন করাতে পারেন। কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন, মেডিকেল অফিসার (কো-অর্ড) সিভিল সার্জন, ডা. নূরেন মুবাশশিরা, সার্ভেইল্যান্স এন্ড ইম্যুনাইজেশন অফিসারডা. মাকসুদুল আমিন।
টিকা প্রদান: এই ক্যাম্পেইনের আওতায় স্কুল বহির্ভূত ৯ মাস বয়স থেকে ১৫ বছর বয়সের কম শিশু- কিশোর এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদেরকে ১ ডোজ ঞঈঠ টিকা প্রদান করা হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্তা অনুমোদিত এক ডোজ টিকা আনুমানিক ১০-১২ বছর সুরক্ষা প্রদান করবে। এই টিকা সম্পূর্ণ নিরাপদ, কার্যকর এবং হালাল, যা ইসলামিক ফাউন্ডেশন দ্বারা নিশ্চিত করা হয়েছে। সরকারি ছুটি ব্যতিত সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে। অসুস্থ এবং বাদ পরা শিশুরা পরবর্তী সময়ে পার্শ্ববর্তী টিকাদান কেন্দ্র থেকে ক্যাম্পেইন চলাকলীন সময় টিকা নিতে পারবে।
অভিভাবক ও শিক্ষকদের প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ করছি-আপনার শিশুদের যঃঃঢ়ং://াধীবঢ়র.মড়া.নফ ওয়েবসাইটে জন্মনিবন্ধন (অনলাইন) সনদের মাধ্যমে রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন করুন এবং সময়মতো নির্ধারিত কেন্দ্রে নিয়ে আসুন। যে সকল শিশু ওয়েবসাইটে রেজিষ্ট্রেশন করেতে পারবেন না-তাদের হোয়াইট লিস্টিং ও লাইন লিস্টিং করে ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। স্বাস্থ্যকর্মী, স্থানীয় প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণ, মিডিয়াকর্মী এবং সুশীল সমাজের সক্রিয় সহযোগিতা কামনা করছি যাতে উদ্দিষ্ট ১টি শিশুও টিকার আওতার বাইরে না থাকে।