তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা : সিরাজগঞ্জ পৌরসভার দুই এলাকায় হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। মাত্র তিন দিনে অন্তত দুইশ বাসিন্দা এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের অনেকে পার্শ্ববর্তী নর্থবেঙ্গল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি হয়েছেন। অনেকে সিরাজগঞ্জ জেলারেল হাসপাতাল ভর্তি হয়ে কিংবা বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ রোগ ছড়িয়ে পড়ার জন্য দুই ধরনের কারণ সামনে এনেছেন পৌরবাসী ও স্বাস্থ্য বিভাগ।
ধানবান্ধি ও হোসেনপুর থেকে কয়েকদিনে বেশ কয়েকজন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আকিকুন নাহার। তিনি বলেন, তাদের উপযুক্ত চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বিষয়টি স্বাস্থ্য বিভাগও অবগত। দূষিত সাপ্লাই পানি ও দুর্বল পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার কারণে তারা আক্রান্ত হতে পারেন।
ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাবের কারণ হিসেবে রোগী ও তাদের স্বজনেরা পৌরসভার সরবরাহ করা পানি দূষণকে দায়ী করছেন। অপরদিকে ঘন বসতিপূর্ণ ধানবান্ধির বাসিন্দাদের দুর্বল স্যানিটেশন বা পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থাকে দায়ী করেছেন স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন। রাজধানীর রোগতত্ত্ব বিভাগের কর্মীরা মোবাইল ফোনে তাদের কাছে খোঁজ-খবর নিয়েছেন। তবে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষায় জন্য মাঠ পর্যায়ে কেউ আসেননি বলে স্থানীয় লোকজন ও স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন।
শহরের ধানবান্ধিতে প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি নর্থ বেঙ্গল জেনারেল হাসপাতাল। প্রতিষ্ঠানটির জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মো. আলমগীর হোসেন জানান, ১৫ দিনে ডায়রিয়া বিষয়ে আক্রান্ত ১২২ জনের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবারই ১৮ জন ভর্তি হয়েছেন। ৫০ জন চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। ৭২ জন ভর্তি আছেন। এসব রোগীর অধিকাংশই ধানবান্ধির জানিয়ে তিনি বলেন, সাপ্লাই পানি থেকে তাদের ডায়রিয়া হয়েছে বলে রোগীরা জানিয়েছেন। স্বাভাবিকভাবে প্রতিদিন গড়ে দুই-তিন জন করে ডায়রিয়া রোগী আসেন। এমন চাপ দুই বছরেও দেখা যায়নি।
ধানবান্ধি থেকে পৌনে এক কিলোমিটার পশ্চিমে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল। সেখানকার সিনিয়র র স্টাফ নার্স সোমা রানী ঘোষ জানান, দশদিনে হাসপাতালে ১৭৭ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। তাদের অধিকাংশই ধানবান্ধির। বৃহস্পতিবারও এ এলাকার ২১ জন ভর্তি হয়েছেন। তিনি বলেন, সাধারণত এতো ডায়বিয়া বিষয়ে রোগী আসে না। দিন গড়ে চার-পাঁচজন ভর্তি হন। হঠাৎ হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়েছে।