অবশেষে ‘পানিপ্রবাহ সংক্রান্ত জাতিসংঘ সনদে’ অনুস্বাক্ষর করবে বাংলাদেশ। গতকাল ১৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।

এ সংক্রান্ত সরদার আবদুর রহমান প্রেরিত একটি বিশেষ প্রতিবেদন এক মাস আগে গত ১৬ মার্চ ২০২৫ তারিখে দৈনিক সংগ্রামের প্রথম পাতায় শীর্ষস্থানে প্রকাশিত হয়। সেই প্রতিবেদনে উল্লিখিত অভিমত স্বীকার করে নিলো সরকার। “অভিন্ন নদীর পানির হিস্যা আদায়ে সহায়ক হবে: পানি-প্রবাহ সংক্রান্ত জাতিসংঘ সনদে স্বাক্ষরের এখনই উপযুক্ত সময়” শিরোনামে সংগ্রামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, “নদীর পানি-প্রবাহ সংক্রান্ত জাতিসংঘের কনভেনশনে বাংলাদেশ অজ্ঞাত কারণে এখনো অনুস্বাক্ষর করেনি। এতোদিন প্রতিবেশী দেশের আনুকূল্যপ্রাপ্ত প্রভাবশালী ব্যক্তিদের অনীহার কারণে বাংলাদেশ এতে স্বাক্ষর করেনি। এই সনদে বাংলাদেশের পক্ষে এই সমর্থন ও অনুস্বাক্ষর করার এখনই উপযুক্ত সময় বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।”

জাতিসংঘের এই সনদে স্বাক্ষরের বিষয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ‘কনভেনশন অন দ্য প্রোটেকশন অ্যান্ড ইউজ অব ট্রান্সবাউন্ডারি ওয়াটার কোর্সেস অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল লীগ-১৯৯২ কনভেনশন’-এ অনুস্বাক্ষর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ জন্য প্রয়োজনীয় সব প্রক্রিয়া (সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা, আন্তঃমন্ত্রণালয়, ওই কনভেনশনের সেক্রেটারিয়েট থেকে লোক আসা) এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে এ কনভেনশনে অনুস্বাক্ষর করছে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, অভিন্ন নদীর পানি ভাগাভাগি ও পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে আমরা সব সময় বলি কেনো আন্তর্জাতিক আইনগুলোতে সই করছি না, এ অভিন্ন জলরাশির পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে জাতিসংঘের দুটো (১৯৯৭ কনভেনশন ও ১৯৯২ কনভেনশন) আইন রয়েছে। ১৯৯৭ কনভেনশনটি ১৯১৪ সালে কার্যকর হয়। উজানের দেশগুলোর অনীহার কারণে মাত্র ৩৬টি দেশের সই লাগতো। সেই সই পেতেই লেগে যায় ১৭ বছরেরও বেশি সময়। আরেকটি আইন রয়েছে যেটি খুবই কার্যকর। যদিও ১৯৯২ সালের এ আইনটি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নকে টার্গেট করে, এটি ২০১৬ সালে সব দেশের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে এ পর্যন্ত ১১টি দেশ এতে সই করেছে। তার মধ্যে বেশির ভাগ দেশ হচ্ছে আফ্রিকান।