বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তেহরান থেকে নিরাপদ জায়গায় চলে গেছেন। তিনি যেখানে অবস্থান করছেন, আগ্রহী বাংলাদেশিদেরও তেহরান ত্যাগ করে সেখানে বা তার আশেপাশে চলে যেতে বলা হচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বুধবার (১৮ জুন) জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, তেহরানের সঙ্গে ইন্টারনেটে যোগাযোগ খুবই সীমিত। এ কারণে তথ্য পেতে অনেক বিলম্ব হচ্ছে। তবে, আমরা জানি, আগ্রহী বাংলাদেশিদের তেহরান থেকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘সোমবার (১৬ জুন) রাতে ঝুঁকি থাকার কারণে রাষ্ট্রদূত নিরাপদ জায়গায় চলে গেছেন। তিনি যে জায়গায় আছেন, অন্য বাংলাদেশিদেরও সেখানে থাকার ব্যবস্থা করা সম্ভব। তবে এখনও পর্যন্ত কতজন বাংলাদেশি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, সেই তথ্য আমাদের হাতে নেই।’

সরকারের আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ইরানের পরিস্থিতি বুঝে রাষ্ট্রদূত এবং দূতাবাসকে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে। ইন্টারনেট সংযোগ সীমিত হওয়ার কারণে তাদের পক্ষে সবসময় আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে তাদেরকে অবস্থা বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘যদি কোনও বাংলাদেশি ইরান ছেড়ে সীমান্তবর্তী কোনও দেশে যেতে চান, তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী সর্বতো সহায়তা দেবে বাংলাদেশ দূতাবাস। এজন্য অর্থ, লজিস্টিক, ভিসাসহ যেকোনও ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।’

যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে সড়ক পথে চলাচল অত্যন্ত সীমিত হয়ে পড়েছে। সে কারণে সীমান্তবর্তী পাকিস্তান, আজারবাইজান বা তুরস্কে যাওয়া কঠিন হবে। তারপরেও যদি সম্ভব হয়, সে ব্যবস্থা করা হবে, বলে তিনি জানান।

এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা বাড়তি অর্থ পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। দূতাবাসের কাছে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ রয়েছে।’

এর আগে গত রোববার (১৫ জুন) বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য হটলাইন চালু করে বাংলাদেশ দূতাবাস। ইরানে বসবাসরত সব বাংলাদেশি নাগরিকদের নিম্নোক্ত মোবাইলফোন নম্বরগুলোতে হোয়াটসঅ্যাপসহ সরাসরি যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হয়েছে। + ৯৮৯৯০৮৫৭৭৩৬৮ ও +৯৮৯১২২০৬৫৭৪৫।

দূতাবাসের এক কর্মকর্তা জানান, ইরানে মোট ৬৭২ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ও রোগী আছেন। পাশাপাশি, আরও প্রায় আট হাজার থেকে ১৪ হাজারের মতো অনিবন্ধিত বাংলাদেশিও সেখানে বসবাস করছেন। অনেকেই ইরানকে অন্যান্য দেশে যাওয়ার ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করেন।

অন্যদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, তেহরানে বর্তমানে যে চারশর মতো বাংলাদেশি অবস্থান করছেন, তারা সবাই অক্ষত রয়েছেন।