এইচ এম আকতার, যুক্তরাষ্ট্র থেকে : আল্লাহু আকবার ধ্বনিতে মুখরিত যুক্তরাষ্ট্রের পেন্সিলভেনিয়া কনভেনশন সেন্টার। বক্তাদের আলোচনা শুরু এবং শেষ হয় আল্লাহু আকবার ধ্বনিতে। প্রায় ১৫,২০ হাজার লোকের উপস্থিততে যখনই কোন ইসলামি স্কলার বক্তব্য দিচ্ছেন যখন সমস্বরে আল্লাহু আকবার ধ্বনি উচ্চারিত হচ্ছে।

IMG-20250810-WA0039

শনিবার ছিল মুসলিম উম্মাহ অব নর্থ আমেরিকা( মুনা) সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন। এ দিন ড আসিফ ইরানি,আব্দুস সালাম আজাদী, ড, শেখ আবু সামি সিরাজুল ইসলামসহ প্রায় ১০ জন ইসলামি স্কলার বক্তব্য রাখেন। এদিন ভারচুয়াল বক্তব্য রাখেন ড: মিজানুর রহমান আজহারি।

আল্লাহু আকবার ধ্বনি প্রবাসি সব ভাষাবাসি মুসলমানদের অনুপ্রনিত করছে। মুসলমানদের মধ্যে ইসলাম প্রতিষ্ঠার আগ্রহ সৃষ্টি হচ্ছে। বৃহৎ এই কনভেনশন সেন্টারে একই যখনই আল্লাহু আকবার ধ্বনি উচ্চারণ করছে তখন মনে হচ্ছে যেনো এটি কোন মুসলিম ভুখন্ড। আশপাশের প্রায় অর্ধশতাধিক আবাসিক হোটেলে তারা অবস্থান করছেন। সকালে যখন প্রোগ্রাম শুরু এবং রাতে যখন শেষ হয় তখন দলে দলে মুসলমানরা হোটেলে যাচ্ছে। এ পরিবেশ দেখলে চোখের পানি ধরে রাখা যায় না।একটি খৃস্টান রাষ্ট্রে এ পরিবেশ কল্পনা করা যায়। ৯৮ শতাংশ এ অমুসলিম রাষ্ট্রে ইসলাম প্রচারে কাজ করছে মুনা।এটি মুনার নবম কনভেনশন।

IMG-20250810-WA0038

এই মহাসম্মেলনের মাধ্যমে ইসলামের আলো সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতেই এই আয়োজন।এ সম্মেলনে আমেরিকার প্রায় ৫০ অঙ্গরাজ্য থেকে অংশ গ্রহন করে। এখানে বসবাসরত এশিয়া ইউরোপ আফ্রিকান মুসলমানরা অংশ নিয়েছেন।

IMG-20250810-WA0042

ইসলাম প্রচার এবং প্রসারে কৌশল এবং কর্ম পদ্ধতি নিয়ে তারা আলোচনা করেন। তাদের আলোচনা ইসলামি অর্থনীতি এবং রাজনৈতিক মুক্তির পথ উঠে আসে। তারা রাসুল সাঃ এবং তার খেলাফতের ইসলামের স্বর্ণ যুগ নিয়ে আলোচনা করেন।তারা বলেন মুসলমানরা যদি এখনো কুরআনকে আকড়ে ধরে তাহলে ইসলামের স্বর্ণ যুগ ফিরে আসবে।

এবারের সম্মেলনে শতাধিক স্টল বসেছে। এতে রয়েছে গাজার জন্য সাহায্য, যাকাত,ইসলামি ফাইন্যান্স,নাহারসহ বহু চ্যারেটি সংগঠন। এছাড়াও বিভিন্ন পোশাকের দোকান রয়েছে। যা ক্রেতাদের আকৃষ্ট করছে।

ড,আসিফ ইরানি বলেন,সালাহ উদ্দিন আইয়ুবি বিশ্বের অনেক দেশ জয় করেছিল।এর কারণ ছিল মুসলিম উম্মার ঐক্য। জাতীয়বাদ আমাদের জন্য একটি অভিশাপ। সাদা কালা লম্বা খাটো,বাংলাদেশি পাকিস্তানি আমেরিকা আফ্রিকা এটি আমাদের কোন পরিচয় নয়।আমাদের পরিচয় আমরা মুসলমান। মুসলিম উম্মাহকে আবারও এক হতে হবে। গাজায় কোন কারণ ছাড়া আজ হামলা করা হচ্ছে। গাজার পাশে আমাদের দাড়াতে হবে।

শেখ আবু সামিয়া সিরাজুল ইসলাম বলেন,আমাদের উত্তর আদর্শ দিয়ে মুসলিম এবং অমুসলিমদের মন জয় করতে হবে। তিনি বলেন আমাদের নিয়তের বিশুদ্ধতা লাগবে। তাহলে আমাদের আমল কবুল হবে।আমরা আল্লাহ সন্তুষ্টির জন্য আমল করবো। এজন্য আমাদের এখলাস লাগবে। আমাদের গোপন গুনাহ বন্ধ করতে হবে এবং গোপন আমল বাড়াতে হবে।

আব্দুস সামাদ আজাদী বলেন,আপনার সন্তানকে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার বানান কিন্তু তাকে দ্বিনের শিক্ষা দেন। আমরা ইউরোপ আছি সুন্দর পরিবেশ।কিন্তু আমাদের সন্তানরা যেনো হারিয়ে না যায়। সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। খৃস্টান রাষ্ট্রে অনেক মুসলমান আজ হারিয়ে যাচ্ছে। দুনিয়া এবং আখেরাত দুটির মধ্যে সমন্বয় করতে হবে। তাহলে আমরা সফল হবো।

ড: মিজানুর রহমান আজহারি বলেন,আমরা যদি কুরআনকে অনুস্মরণ করি তাহলে আল্লাহ বিজয় দান করবেন। রাসুল সাঃ কে আল্লাহ গোটা বিশ্বকে দেখিয়েছেন। ইউরোপ আমেরিকায় মানুষ আজ ইসলাম গ্রহণ করছেন।ইসলাম আজ ছড়িয়ে পড়ছে। ইসলামের দাওয়াত যখন কোন অমুসলিমকে দিবেন তখন তিনি সহজেই গ্রহণ করবে।কারণ তিনি রুহুর জগতে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন আল্লাহ আমাদের রব।সুতরাং এটি তার পরিচিত। ইসলাম কোন জাতির জন্য নয়।এটির সবার জন্য যে কেউ ইসলাম গ্রহণ করতে পারে। এটি কোন সাম্প্রদায়িক ধর্ম নয়।

তিনি আরও বলেন, যারা পশ্চিমা বিশ্বে বসবাস করছেন তাদের দাওয়াতের নিয়ত থাকতে হবে। অমুসলিমদের দেশে স্থায়ীভাবে থাকতে চান তাদের ইসলামের দাওয়াতি কাজ করতে হবে। রাসুল সাঃ বলেছেন যারা অমুসলিম দেশে বসবাস করবেন তারা আমার জিম্বায় নেই। তবে দ্বীন প্রচারের জন্য হলো ভিন্ন কথা।