চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার (২৬ জুন)। সারা দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন। তবে প্রথম দিনেই ঘটে যায় এক হৃদয়বিদারক ঘটনা। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন মিরপুরের সরকারি বাঙলা কলেজ কেন্দ্রে নির্ধারিত সময়ের দেড় ঘণ্টা পর পৌঁছানো এক ছাত্রীকে পরীক্ষায় অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।
জানা গেছে, ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী আনিসা আহমেদ তার মায়ের মেজর স্ট্রোকের কারণে দেরিতে কেন্দ্রে পৌঁছান। তার বাবা দুই বছর আগে মারা গেছেন। পুরো পরিবারের একমাত্র ভরসা আনিসাই। মাকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েই তিনি ছুটে যান পরীক্ষাকেন্দ্রে, কিন্তু কেন্দ্রে ঢুকতে না পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে ব্যাপক সহমর্মিতা তৈরি হয়। সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল ফেসবুকে জানান, আনিসার সঙ্গে তার কথা হয়েছে এবং শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। তিনি আশ্বাস দেন, পূর্বের একটি মামলার নজির অনুসরণ করে আনিসার পরীক্ষা নেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করা যেতে পারে।
তিনি লিখেছেন, "আনিসার কলেজের অধ্যক্ষ এবং শিক্ষকরাও সর্বাত্মক সহযোগিতা করছেন। বিষয়টি আইনগতভাবে সহায়তা করবো বলেও জানিয়েছি। আশা করি তাকে আদালতের দ্বারস্থ হতে হবে না।"
এদিকে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, মানবিক বিপর্যয়ের মুহূর্তে নিয়মের কঠোরতা কি ছাত্রীর ভবিষ্যৎ থামিয়ে দেওয়ার কারণ হওয়া উচিত? অনেক অভিভাবক ও পথচারী মন্তব্য করেছেন, "মেয়ে কি ইচ্ছা করে দেরি করেছে? এই পরিস্থিতিতেও সে কেন্দ্রে এসেছে, এটিই তার চেষ্টা প্রমাণ করে। ওকে অন্তত সুযোগ দেওয়া যেত।"
শিক্ষা বোর্ড ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কোনো বিবৃতি না দিলেও সামাজিক চাপে মানবিক বিবেচনায় আনিসাকে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ মিলতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী।